দুই চীনা লেখকের আমন্ত্রণ বাতিল করল ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা
১১ সেপ্টেম্বর ২০০৯দুই লেখকের মধ্যে একজন বেই লিং এবং অন্যজন দাই কুইং৷ অবশ্য দ্বিতীয়জন সাংবাদিক হিসাবেও পরিচিত৷ এই বেই আর দাই দুজনেই চীন সরকারের রোষনজরে রয়েছেন৷ এঁদের মধ্যে প্রথমজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন৷ দ্বিতীয়জন শ্রীমতী দাই কুইংকে কিছুদিন আগেই গ্রেপ্তার করেছিল বেইজিং সরকার৷ অভিযোগ ছিল অবশ্যই রাজদ্রোহ৷ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় তিনি হাজতবাস থেকে মুক্তি পান৷
আগামী অক্টোবরের ১৪ থেকে ১৮ তারিখ ফ্রাঙ্কফুর্টের আন্তর্জাতিক বইমেলা শুরু হচ্ছে৷ বিশ্বের বৃহত্তম এবং বিপুল সম্মানজনক এই বইমেলায় ২০০৯ সালের বিশেষ অতিথি দেশ চীন৷ দালাই লামাকে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বিশেষ আমন্ত্রণে জার্মানিতে আসতে দেওয়ায় বার্লিন বেইজিং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটু চিড় ধরেছিল মাস আড়াই আগে৷ ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার প্রস্তুতি পর্বে দুই দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে আগামী সপ্তাহান্তে৷ সেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য চীনের প্রখ্যাত লেখকদের তালিকায় ছিল বেই লিং এবং দাই কুইং - এর নাম৷ কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে দুই লেখকের আমন্ত্রণপত্র ফিরিয়ে নিয়েছে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা কর্তৃপক্ষ৷
বইমেলার তরফে আয়োজকদের প্রধান পেটার রিপেকিন জানান, চীনের গুরুতর আপত্তিতে এই দুই লেখককেই আসতে মানা করা হয়েছে৷ রিপেকিন নিজেই টেলিফোনে বেই লিং-কে ফ্রাঙ্কফুর্টে আসতে নিষেধ করে দেন৷ বেই নিজেই একথা জানিয়েছেন সংবাদসংস্থা ডি পি এ-কে৷ ঘটনার আকস্মিকতায় ক্ষুব্ধ লিং বলেন, এই ঘটনাটা ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা৷ তারা প্রয়োজনে ‘না' বলতে পারে না৷
এই সিম্পোসিয়াম বা আলোচনাচক্রের উদ্যোক্তা এবং আয়োজক জার্মানি তথা ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা হলেও এর সঙ্গে পার্টনার হিসাবে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও৷ যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শমতই চীনের ওই দুই লেখককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, জানিয়েছেন বইমেলার মহাপরিচালক ইয়ুর্গেন বুশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বুশ কোনরকমের চাপের মুখে নতিস্বীকারের অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তাঁর দাবি, চীন এবার ফ্রাঙ্কফুর্টের সম্মানিত অতিথি দেশ৷ তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছা, পছন্দ অপছন্দকে গুরুত্ব দিতেই হবে৷
চীন যে এই বিষয়ে নাক গলিয়েছে, তা আগেই জানান আমেরিকায় বসবাসরত চীনা লেখক বেই লিং৷ জার্মান বার্তাসংস্থা ডি পি এ-কে টেলিফোনে লিং গভীর রাতে জানান, বেইজিং সাফ বলে দেয়, দুই বিতর্কিত লেখক হাজির থাকলে তারা আলোচনা বয়কট করবে৷ অতএব, বাধ্য হয়েই লেখদ্বয়কে আসতে মানা করেছে বইমেলা কর্তৃপক্ষ৷
প্রতিবেদক: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সম্পাদনা: দেবারতি গুহ