তাইওয়ানের আকাশে চীনা সামরিক বিমান
৮ জুন ২০২৩চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা কিছুতেই কমছে না৷ তাইওয়ানের সূত্র অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ৩৭টি চীনা সামরিক বিমান সে দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে৷ ফলে তাইওয়ানও প্রতিরক্ষা প্রণালী চালু করতে বাধ্য হয়েছে৷ অর্থাৎ আক্রমণ ঘটলে পালটা আত্মরক্ষার ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখছে তাইওয়ান৷ তবে তাইওয়ানের আকাশে প্রবেশ করার পর কয়েকটি চীনা বিমান প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দিকে উড়ে যায়৷ উল্লেখ্য, গত তিন বছরে চীন বার বার তাইওয়ানের কাছাকাছি বোমারু বিমান ওড়ালেও সরাসরি সে দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে নি৷
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ চীনা বিমানবাহিনীর বিমান তাইওয়ানের দক্ষিণ পশ্চিম অংশের আকাশে প্রবেশ করে৷ সেগুলির মধ্যে জে-১১ ও জে-১৬ মডেলের বোমারু বিমান ছাড়াও পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এইচ-৬ বিমানও ছিল৷ তাইওয়ানের কাছে সেই ‘এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন' অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেখানে নিয়মিত টহল দিয়ে সে দেশ হুমকির মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবে বলে মনে করে৷
বৃহস্পতিবারের ঘটনা চীনের সামরিক মহড়ার অংশ ছিল বলে তাইওয়ান মনে করছে৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, আকাশ থেকে টহলদারি ও দূর পাল্লার দিক নির্ণয়ের প্রশিক্ষণ জোরালো করতেই চীন এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ তবে তাইওয়ান সতর্কতার খাতিরে সেই অঞ্চলে জাহাজ ও বিমান পাঠিয়েছে এবং জমি-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রণালী সক্রিয় করেছে৷ চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি৷
বুধবারই চীন প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম অংশে রাশিয়ার সঙ্গে আকাশপথে দ্বিতীয় দফার যৌথ নজরদারি করেছে৷ তার আগে মঙ্গলবার জাপান সাগর ও পূর্ব চীন সাগরেও চীনা সামরিক বিমানের তৎপরতা দেখা গেছে৷ ফলে জাপানেও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা গিয়েছিল৷ বৃহস্পতিবারের ঘটনা আগের দুই দিনের তৎপরতার সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়৷
এ দিকে চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্কে উত্তেজনা কমাতে বেইজিং সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানান৷ অ্যামেরিকার আকাশে সম্ভাব্য চীনা গুপ্তচর বেলুনের আবির্ভাবের জের ধরে ব্লিংকেন ফেব্রুয়ারি মাসে পরিকল্পিত বেইজিং সফর বাতিল করেছিলেন৷ এবার আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি চীনে গিয়ে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করবেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক করার যে উদ্যোগ নিচ্ছেন, ব্লিংকেনের সফর সেই লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে৷ এর আগে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করেছিলেন৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)