ঢাকায় বিশ্বকাপ ট্রফি
ভারতে ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র দুই মাস বাকি। বিশ্বকাপ ট্রফি গত ৬ আগস্ট ঢাকায় এসে পৌঁছায়। ক্রিকেটার ও সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য তিনটি ভেন্যুতে ট্রফিটি রাখা হয়৷ সেটিকে ঘিরে ক্রিকেটভক্ত ও অনুরাগীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়।
শুরু পদ্মা সেতু থেকে
ঢাকায় বিশ্বকাপ ট্রফির যাত্রা শুরু হয় ৭ আগস্ট পদ্মা সেতুর পার থেকে। আইসিসির ঐতিহ্য অনুযায়ী বিশ্বকাপ ট্রফি যে দেশে নেওয়া হয়, সেই দেশের কোনো একটা বিশেষ স্থানে বা বিশেষ স্থাপনার সামনে রেখে ফটোসেশন করা হয়।
দ্বিতীয় দিন মিরপুর স্টেডিয়ামে
ঢাকায় বিশ্বকাপ ট্রফির তিন দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে ট্রফিটি রাখা হয় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। জাতীয় পুরুষ ও নারী ক্রিকেট দল, বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটার, অফিসিয়েল, সংগঠক ও গণমাধ্যমের জন্য ট্রফিটি উন্মুক্ত করা হয়।
বসুন্ধরা সিটিতে উপচে পড়া ভিড়
বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ট্রফির ভ্রমণের তৃতীয় এবং শেষ দিনে ঢাকার বসুন্ধরা সিটিতে শপিং মলে সাধারণ দর্শকদের জন্য ট্রফিটি উন্মুক্ত করা হয় ৯ আগস্ট। ট্রফিটি নিজ চোখে দেখার জন্য সাধারণ দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়।
দর্শকদের আগ্রহ
এর আগে ২০১১ সালে বাংলাদেশে এসেছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপের ট্রফি। প্রায় ১ যুগ পর আবার সামনে থেকে এই ট্রফিটি দেখতে তাই ক্রিকেটভক্ত ও দর্শনার্থীদের আগ্রহের সীমা ছিল না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রফিটি একনজর দেখার অপেক্ষা করেছেন।
‘বিশ্বকাপ ট্রফি আমাদেরই থাকবে’
বিশ্বকাপ ট্রফি দেখতে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে আসেন টাইগার মনির। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বকাপ তো এবার আমাদেরই। এটা নিয়ে যাওয়ার দরকার কী? আমার বিশ্বাস, ট্রফি এবার আমাদের ঘরেই আসবে।’’
উৎসবমুখর পরিবেশ
বাংলাদেশ পরিভ্রমণের শেষ দিনে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ট্রফি আনায় পুরো এলাকাতেই ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। এতে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, বিশ্বকাপ সামনে থেকে স্বচক্ষে দেখছেন এটা বিশ্বাস হচ্ছে না।
‘আমাদের এবারের টিমটা বিশ্বকাপের যোগ্য’
বিশ্বকাপ ট্রফি দেখতে ময়মনসিংহ থেকে ভোরে ঢাকায় এসেছেন রতন। তিনি বলেন, ‘‘এবার আমাদের টিমটা অনেক বেশি শক্তিশালী। সাম্প্রতিক সব সিরিজে আমরা ভালো পারফর্ম করেছি। আমার মনে হয়, এবারের দলটা বাংলাদেশের বিগত দলগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি যোগ্য দল।
‘আমরা দুইজনই বিশাল ফ্যান’
বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বিশ্বকাপ ট্রফি দেখতে এসেছেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী কাসফিয়া রউফ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারে আমি আর আমার মা ক্রিকেটের বিশাল ভক্ত। অনেক ছোটবেলা থেকে মায়ের সাথে বসে আমি খেলা দেখি. যদিও তখন তেমন কিছু বুঝতাম না। আজকে সামনাসামনি ট্রফিটি দেখে অনেক ভালো লাগছে।’’
ক্ষুদে ভক্ত
ঢাকার আশুলিয়া থেকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ট্রফি দেখতে এসেছেন প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মার্জিয়া আক্তার। প্রিয় খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান যেন এবার অনেক চার-ছয় মারতে পারে, এমনটাই প্রত্যাশা এই ক্ষুদে ভক্তের।
‘আপনারা বেশি বেশি মাঠে খেলা দেখবেন’
ঢাকার বসুন্ধরা সিটিতে বিশ্বকাপ ট্রফি দেখতে এসেছেন আকাশ। তিনি বলেন, ‘‘আজকের দিনটা আমার জন্য স্মরণীয়, কারণ, বাংলাদেশ ক্রিকেটের আমি অন্ধ ভক্ত। দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা বেশি বেশি ক্রিকেট খেলা দেখতে মাঠে আসবেন, এতে খেলোয়াড়রা অনেক অনুপ্রাণিত হবেন এবং আমাদের জন্য আরো বেশি জয় ছিনিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করবেন।’’
‘ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, কিন্তু তবুও আনন্দ আছে’
বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের নীচতলার একটি তৈরি পোষাকের দোকানের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. হাসান বলেন, ‘‘মার্কেটে বিশ্বকাপের এই প্রোগ্রামের কারণে আমাদের আজকের সারাদিনের ব্যবসা শেষ। কিন্তু তারপরেও ভালো লাগছে, কারণ, আজকে একটা বিশেষ মুহুর্ত। আমরা ক্রিকেট-পাগল জাতি, এই দিনটা আমাদের সবার কাছেই আনন্দের।’’
ছবি তোলার বুথ
বিশ্বকাপ ট্রফির সাথে যেন দর্শনার্থী ও ক্রিকেট ভক্তরা ছবি তুলতে পারেন, সেজন্য চারটি পৃথক বুথ করে দেওয়া হয়। তবুও দিনব্যাপী ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আয়োজক ও নিরাপত্তারক্ষীদের।
কঠোর নিরাপত্তা
বিশ্বকাপ ট্রফির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুরো এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং বসুন্ধরার নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা খুব ব্যস্ত ছিলেন। ট্রফির নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে ছবি তুলতে আগ্রহী দর্শনার্থী ছাড়া কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।