টাইমলাইন: ক্লিন ফিড চ্যানেল বিতর্ক
২০১৯ সালে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন টেলিভিশন স্টেশনের মালিকরা৷ তারা বাংলাদেশে সম্প্রচারিত বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন প্রচারের বিপক্ষে ছিলেন৷ ১ অক্টোবর থেকে বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ আছে৷
আইন
২০০৬ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইনে বিদেশি কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সম্প্রচার বা সঞ্চালন করলে লাইসেন্স বাতিল এবং দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে৷
টেলিভিশন মালিকদের দাবি
২০১৯ সালের এপ্রিলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন টেলিভিশন স্টেশন মালিকদের সংগঠন ‘অ্যাটকো’র নেতারা৷ তারা বাংলাদেশে সম্প্রচারিত বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন৷ এর ফলে দেশি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপন হারাচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল তাদের৷ ঐ বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বিদেশি চ্যানেল শুধু বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন নয়, আইন আনুযায়ী কোনো ধরনের বিজ্ঞাপনই দেখাতে পারে না৷
এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের নোটিশ
২০১৯ সালের এপ্রিলে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে দুই কেবল অপারেটর ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান জাদু মিডিয়া ভিশন ও নেশনওয়াইড মিডিয়া লিমিটেডকে বিজ্ঞাপন ছেঁটে বিদেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারের নোটিশ দেয়া হয়েছিল৷ ৩০ জুন পর্যন্ত তাদের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল৷
২৪ ঘণ্টা চ্যানেল বন্ধ
তথ্য মন্ত্রণালয়ের নোটিশ জারির পর জি নেটওয়ার্কের পাঁচটি চ্যানেলের সম্প্রচার ২৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল৷ এর কারণ হিসেবে পরে ‘কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ (কোয়াব) নেতারা বলেছিলেন, বিজ্ঞাপন বাদ দিয়ে বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের প্রযুক্তি না থাকায় বাধ্য হয়ে তাদের চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছিল৷
তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য
এপ্রিল মাসে মন্ত্রণালয়ের নোটিশ জারির মাসখানেক পর মে মাসে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, জুলাইয়ের পর কেবল অপারেটরদের বিদেশি বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে৷
মন্ত্রীর বক্তব্যে অপারেটরদের প্রতিক্রিয়া
নেশনওয়াইড মিডিয়া লিমিটেডের কর্ণধার আফসার খায়ের মিঠু বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজকে সেই সময় বলেছিলেন, তাদের পক্ষে জুলাইয়ের মধ্যে ফ্রেশ ফিড সম্প্রচার সম্ভবপর হচ্ছে না৷ তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘পুরো বাংলাদেশ ডিজিটাল না হলে এটি বাস্তবায়ন করতে বেশ কষ্ট হবে৷ ঢাকা ও চট্টগ্রামে এটি চালু করতে মোটামুটি দুই বছরের মতো লাগতে পারে৷ আর পুরো দেশে এটি চালুর জন্য সরকার আমাদের পাঁচ বছর সময় দিতে পারে৷’’
গতমাসে মন্ত্রীর ঘোষণা
গতমাসে মন্ত্রীর ঘোষণাসেপ্টেম্বরের শুরুতে কোয়াব, অ্যাটকো, বিদেশি চ্যানেলের ডিস্ট্রিবিউটর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সঙ্গে এক বৈঠকের পর তথ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন, ‘ক্লিন ফিড’ ছাড়া বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করলে আইন প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ ক্লিন ফিড মানে হলো কোনো বিজ্ঞাপন থাকতে পারবে না৷ ঐ সময় বলা হয়েছিল, ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল বাংলাদেশে সম্প্রচার করা যাবে না
সম্প্রচার বন্ধ
ঘোষণা মেনে ১ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠানের ফাঁকে বিজ্ঞাপন প্রচার করে এমন বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেন কেবল অপারেটররা৷ তবে এটা করতে গিয়ে বিজ্ঞাপন ছাড়া (ক্লিন ফিড) চলে এমন বিদেশি চ্যানেলও বন্ধ করে দিয়েছিলেন কেবল অপারেটররা৷ পরে বিজ্ঞাপন ছাড়া চলে এমন ২৪টি চ্যানেলের তালিকা পাঠিয়ে সরকার পরিবেশক ও কেবল অপারেটরদের তা সম্প্রচারের নির্দেশ দিলে সেগুলো চালু করা হয়৷