জার্মানির সরকার গড়ার লক্ষ্যে আলোচনা বৃহস্পতিবার
২০ অক্টোবর ২০২১জার্মানিতে কোয়ালিশন সরকার গড়ার প্রক্রিয়া বিশাল কর্মযজ্ঞ৷ এবার বিশেষ করে দুটির বদলে তিনটি দলের অংশগ্রহণের কারণে সেই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩০০ জন অংশ নেবে৷ অর্থাৎ প্রত্যেক দল থেকে ৯৬ জন প্রতিনিধি আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন৷ বৃহস্পতিবার প্রস্তুতি পর্ব শেষ হলে সম্ভবত আগামী সোমবার থেকে থেকে দলীয় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মোট ২২টি গোষ্ঠী বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগামী সরকারের রূপরেখা তৈরির কাজে নেমে পড়বে৷ তাদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করবেন কয়েকজন নেতা৷ স্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি, পরিবহণ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে আগামী সরকারের অভিন্ন কর্মসূচি স্থির হলে মন্ত্রণালয়ের বণ্টন নিয়ে দরকষাকষি হবার কথা৷ শেষ পর্যন্ত সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, উদারপন্থি এফডিপি ও পরিবেশবাদী সবুজ দল সন্তুষ্ট হলে তবেই ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে জার্মানির আগামী সরকার গঠিত হবে৷ তিন দল ঐকমত্য অর্জনে বিফল হলে ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা যাবে৷
আগামী সরকারের কার্যকালে তিন শরিক দলের কর্মসূচি রূপায়ন করতে গেলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে, বাড়তি ঋণ ছাড়া তা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন এসপিডি ও সবুজ দলের নেতারা৷ তবে এফডিপি দল বাজেট ঘাটতির সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করার ঘোর বিরোধিতা করায় বাকি দুই দলও বাধ্য হয়ে সেই নিয়ম মেনে চলার আশ্বাস দিচ্ছে৷ এমনিতেই সেই সীমা বদলাতে হলে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের প্রয়োজন৷ ইউনিয়ন শিবির এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ এফডিপির আপত্তির কারণে করের বোঝা বাড়ানোও সম্ভব হবে না৷ তা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার ও জার্মানির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগের স্বার্থে অর্থের বিকল্প উৎসের খোঁজ চলছে৷ ‘অপ্রয়োজনীয়' ভর্তুকি বন্ধ করেও সেই ব্যবস্থা করা যেতে পারে৷ সবুজ দলের নেতা রোব্যার্ট হাবেকের মতে, বছরে কমপক্ষে বাড়তি পাঁচ হাজার কোটি ইউরোর প্রয়োজন হবে৷
নির্বাচনের পর তিন দলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক স্তরে প্রাথমিক আলোচনার পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম ছিল৷ শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল৷ কড়া গোপনীয়তার বেড়াজালের কারণে তাদের মধ্যে কোনো কথা ফাঁস হয়নি৷ এবার জোট সরকার গড়ার লক্ষ্যে মূল আলোচনায় এমন অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বিশেষ করে এফডিপি দলের একাংশ যেভাবে আগেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপর দাবি জানিয়ে চলেছে, তার ফলে এসপিডি ও সবুজ দল বিরক্তি প্রকাশ করেছে৷ প্রাথমিক আলোচনার পর ভবিষ্যৎ জোট সরকারের রূপরেখা হিসেবে যে খসড়া পেশ করা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই কোয়ালিশন গড়া প্রক্রিয়ার উপর জোর দিচ্ছে দলগুলি৷ এ ক্ষেত্রে সংসদে তিন দলের আসনসংখ্যা, অর্থাৎ রাজনৈতিক শক্তি শেষ পর্যন্ত অভিন্ন কর্মসূচির উপর প্রভাব রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)