1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রহস্যময় গুহাজগতের রোমাঞ্চ

২ অক্টোবর ২০১৭

আজকের যুগেও পৃথিবীর অনেক প্রান্তে মানুষের পা পড়েনি, এমনটা বিশ্বাস করা কঠিন৷ জার্মানির মধ্যে এক আশ্চর্য জলাধারকে ঘিরে এমনই এক রহস্যজনক জগত রয়েছে৷ ডুবুরি গবেষকরা ধীরে ধীরে সেখানে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/2l4uW
ছবি: picture-alliance/Eibner-Pressefoto

জার্মানির অন্যতম রহস্যময় জলাধারগুলির একটি হলো ব্লাউটফ৷ সেখানে আজও নতুন করে অনেক কিছু আবিষ্কার করার আছে৷ উপর থেকে যা দেখা যায় না, তা হলো, পানির গভীরে এক লুকানো জগত রয়েছে৷ অসংখ্য গুহা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত৷ এখনো সব অংশে মানুষ প্রবেশ করেনি৷

জার্মানির সেরা ডুবুরি গবেষকদের অনেকেই সেই রহস্য সমাধান করতে চান৷ এমনিতে তাঁরা মিস্ত্রী, ডাক্তার বা অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেন৷ কিন্তু সময় পেলেই তাঁরা এই গুহারাজ্যের রহস্য উন্মোচনে ডুব দেন৷ গুহা গবেষক ইয়খেন মালমান বলেন, ‘‘যেখানে কেউ কখনো যায়নি, সেখানে যাবার রোমাঞ্চই আলাদা৷ সেই সব জায়গা আবিষ্কারই হয়নি৷ ফলে রোমাঞ্চ তো থাকবেই৷’’

পানির নীচে গুহার মধ্যে ডুবুরি হিসেবে বিচরণ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ সরু পথে বারবার ওঠানামা করলে চাপ সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে৷ সমস্যা দেখা দিলে ডুবুরিকে সেই পথ দিয়েই আবার ফিরে আসতে হয়৷ বেশ কয়েকজন ব্লাউটফে এভাবে মারা গেছে৷ গুহা গবেষক আন্দ্রেয়াস ক্যুশা বলেন, ‘‘মানুষ নিজেই সবচেয়ে বড় বিপদ, বিশেষ করে তার মাথার মধ্যে যা চলে৷ মানসিকভাবে সে যদি এমন পরিস্থিতি সামলাতে না পারে, তখন মারাত্মক ভয়ের এক চক্র তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে৷’’

গবেষকরা এই গুহা ও পানির পথ সম্পর্কে আরও জানতে চান৷ গোটা এলাকার আয়তন ১৬০ কিলোমিটারের বেশি৷ বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে ব্লাউটফে জমা হয়৷

ডাইভার প্রোপালশন ভেহিকেলে চেপে পানির নীচে ২০ মিটার গভীরে যাওয়া যায়৷ সেখানে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ গুহার প্রবেশপথ৷ উলটো দিকের স্রোত সেখানে বেশ শক্তিশালী৷ তার চাপে ডুবুরিদের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ প্রবেশপথের অন্যদিকে অন্ধকার৷ প্রায় এক ঘণ্টা পর ডুবুরিরা প্রথম বার মাথা তুললেন৷

বিশাল খোলা জায়গাটির নাম ম্যোরিকে ক্যাথিড্রাল৷ মাটির ৪০ মিটার নীচে এই জায়গাটি বাইরের জগত থেকে বিচ্ছিন্ন৷ ডুবুরিদের কিছু হলে বাইরে থেকে সাহায্য পাবার কোনো আশা নেই৷ কিন্তু কৌতূহলের বশে তাঁরা এগিয়ে চলেছেন৷ তাঁরা নতুন পথ ও অন্যান্য গুহার সঙ্গে সংযোগ খুঁজে পেতে চান৷ কয়েক বছর আগে গবেষকরা প্রথমবার এই গোপন পথের অস্তিত্ব জানতে পারেন৷

পাথরের অদ্ভুত কারুকর্যভরা জাদুময় এক জগতের মধ্য দিয়ে হেঁটে চলার রোমাঞ্চই আলাদা৷ আন্দ্রেয়াস ক্যুশা বলেন, ‘‘মনে সব সময়ে উত্তেজনা কাজ করে৷ বিশাল এই প্যাসেজের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে প্রথমে কোনো উপলব্ধি হয় না৷ আবিষ্কারের দু-একদিন পর মনে সেই বোধ আসে৷ কারণ, এখানে যে এমন অপরূপ সুন্দর কিছু থাকতে পারে, কেউ তা ভাবেনি৷’’

অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এই মানুষগুলি এই পাতাল জগতের সামগ্রিক পরিমাপ করতে চান৷ তার জন্য জমির উপর থেকে প্রবেশের এক পথের প্রয়োজন রয়েছে, যাতে সব সাজসরঞ্জাম পৌঁছানো যায়৷ বিশেষ ড্রিলিং যন্ত্রের সাহায্যে মাটিতে প্রায় ২০ মিটার গভীর এক গর্ত খোঁড়া হয়েছে৷ ‘স্টেয়ারওয়ে টু হেভেন’ নামের এক সদ্য-আবিষ্কৃত গুহায় বেরিয়ে আসতে চান তাঁরা৷ সেই লক্ষ্য কি সফল হবে?