জার্মানির জোট সরকার ভাঙনের মুখে?
৩ জুন ২০১৯জার্মানির মহাজোট সরকারের দুই শরিক দলের দিনকাল ভালো যাচ্ছে না৷ এক সপ্তাহ আগে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির অত্যন্ত খারাপ ফল করেছে৷ একের পর এক নির্বাচনে জোটসঙ্গী এসপিডি দলের ভরাডুবির প্রবণতাও অব্যাহত রয়েছে৷ একদিকে জনসমর্থনে ভাটা, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ডুবে যাচ্ছে জার্মানির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল৷ এই অবস্থায় জোট সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় বাড়ছে৷ ২০১৭ সালের নির্বাচনের পর দীর্ঘ আলোচনার শেষে এই সরকার গঠিত হয়েছিল৷
রবিবার সামাজিক গণতন্ত্রী দলের আন্দ্রেয়া নালেস দলের সভাপতি ও সংসদীয় দলের নেতার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেন৷ মাত্র ১৩ মাস এই দায়িত্ব সামলানোর পর প্রবল চাপের মুখে তাঁকে বিদায় নিতে হচ্ছে৷ তাঁর ঠিক আগে যাঁরা এই দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদেরও নেতৃত্ব ক্ষণস্থায়ী ছিল৷ কঠিন এই পরিস্থিতিতে কে দলের হাল ধরতে প্রস্তুত, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ এসপিডি দলের, বিশেষ করে বামপন্থি অংশ শুরু থেকেই মহাজোট সরকারে যোগদানের বিরোধী ছিল৷ ফলে দলের পুনর্জাগরণের স্বার্থে সরকার ত্যাগ করার জন্য চাপ বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ সোমবার দলের নেতারা জরুরি বৈঠকে বসছেন৷
চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিও ভালো নয়৷ দলের নতুন সভাপতি আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার একের পর এক ব্যর্থতার ফলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন৷ ম্যার্কেল বিদায় নিলে তিনি আদৌ চ্যান্সেলর পদের যোগ্য কিনা, নতুন করে সেই প্রশ্ন উঠে আসছে৷ ম্যার্কেল দলের সভাপতির দায়িত্ব ছাড়ার সময়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চতুর্থ কার্যকালই হবে চ্যান্সেলর হিসেবে সরে তাঁর শেষ মেয়াদ৷ এমন প্রেক্ষাপটে দলে নেতৃত্বের সংকট আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷
গত সপ্তাহের ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে সবুজ দলের অভাবনীয় উত্থানও সরকারি জোটের দুই দলের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে৷ বিশেষ করে পরিবেশ সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ ইউরোপের অন্য অনেক দেশের মতো জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলিও তাদের প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন৷ একটি জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী সবুজ দল এই মুহূর্তে ম্যার্কেলের দলকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে৷
অভ্যন্তরীণ সংকট সত্ত্বেও জার্মানির জোট সরকারের দুই শরিক দল এই মুহূর্তে আগাম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়৷ নেতৃত্বের অভাবের পাশাপাশি ভোটারদের মন জয় করতে তাদের হাতে কোনো শক্তিশালী হাতিয়ারও নেই৷ অথচ এসপিডি দলের নেতৃত্বে রদবদলের জের ধরে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
এসিবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)