জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা
১৭ ডিসেম্বর ২০১২জার্মানিতে ব্যবহারিক বিষয়গুলো জোর দেওয়া হয় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেগুলোকে বলা হয় হোখশুলে৷ আর সেই তালিকায় বর্তমানে এক নম্বরে রয়েছে টেকনিশে উনিভার্সিট্যাট ম্যোনশেন বা টিইউএম৷ গোটা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ে যে ব়্যাংকিং করা হয়, সেই শাংহাই ব়্যাংকিং এ টিইউএম এর অবস্থান ৫৩৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগটি গোটা বিশ্বের মধ্যে ১২তম স্থান লাভ করেছে৷
জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় সেই ১৮৬৮ সালে৷ প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে পড়াশোনা করছে প্রায় ৩১ হাজার ছাত্রছাত্রী৷ এর মধ্যে প্রায় ১৬ শতাংশ এসেছে বিদেশ থেকে৷ তাদের একজন বাংলাদেশি ছাত্র মাহফুজুর রহমান৷ বাংলাদেশের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে ব্যাচেলর্স পাশ করা এই ছাত্র বর্তমানে কমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টার্স করছেন৷ টিইউএম এ ভর্তি হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখ প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনার জন্য অন্যতম নামকরা ইউনিভার্সিটি৷ অনার্স শেষ করার পর মাস্টার্সের জন্য যে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আমার মাথায় ছিলো তার মধ্যে এটি একটি৷ এখানে ট্যুইশন ফি অন্যদেশের তুলনায় কম, এছাড়া পড়াশোনার মান ভালো৷ জার্মানির অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এটি৷''
জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিগুলোতে পড়ার একটি বড় সুবিধা হলো ইন্টার্নশিপের সুবিধা৷ জার্মানির অর্থনীতি শিল্পভিত্তিক হওয়াতে এখানে অনেক বড় বড় শিল্প কারখানা রয়েছে৷ তার মধ্যে নামকরা গাড়ি কোম্পানিগুলোতো রয়েছেই৷ টিইউএম এর প্রচুর ছাত্রছাত্রীর জন্য ভবিষ্যত ক্যারিয়ার হতে পারে এসব কোম্পানিতে, জানালেন মাহফুজুর রহমান৷ তিনি নিজেও চান পড়াশোনা শেষে জার্মানিতেই নামকরা কোন কোম্পানিতে চাকরির জন্য চেষ্টা করবেন৷
মিউনিখের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৩টি ফ্যাকাল্টি রয়েছে৷ এছাড়া রয়েছে ইন্টিগ্রেটিভ রিসার্চ সেন্টার৷ ছাত্রছাত্রীদের জন্যও বৃত্তির সুযোগ রয়েছে এখানে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বৃত্তি, ডয়েচল্যান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম সহ নানা বৃত্তির সুযোগ রয়েছে টিইউএম-এ৷ তবে এইজন্য ভালো ফলাফল করাটা জরুরি, বলে জানালেন মাহফুজ৷
জার্মানির যে কোন শহরের চেয়ে মিউনিখের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি৷ অন্যদিকে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেমেস্টার ফিও কিছুটা বেশি৷ তাই জার্মানির অন্যান্য রাজ্যের শিক্ষার্থীদের তুলনায় এখানকার শিক্ষার্থীদের ওপর অর্থনৈতিক একটা চাপ থাকে৷ তবে সেই চাপ কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে পার্টটাইম জব সেন্টার, যেখানে গেলে শিক্ষার্থীরা কাজ খুঁজতে পারে৷ এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশি ছাত্র মাহফুজ বলেন, ‘‘যারা পড়তে আসে তারা পার্টটাইম চাকরি করতে পারে এবং এখানে সুযোগও অনেক বেশি৷ আমি নিজেও সেমেস্টারের ছুটিতে কাজ করেছি৷ আমার পরিচিত অনেক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করছে৷ মিউনিখ অনেক ব্যয়বহুল শহর হলেও এখানে কাজেরও সুযোগ অনেক, সেটা দিয়েই পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব৷ তাই স্কলারশিপই একমাত্র উপায় নয়৷''
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা শিক্ষার জন্যও একটি ভালো জায়গা হতে পারে৷ বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য জার্মান ভাষার কোর্স তো রয়েছেই, তার বাইরেও ইংরেজি, আরবি, ফরাসি সহ ১৫টি ভাষা শিক্ষার কোর্স রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য৷