জার্মানিতে সেরা বেহালার শহরে
১৪ অক্টোবর ২০২২জার্মানির দক্ষিণে বাভেরিয়া রাজ্যের মিটেনভাল্ড শহরে তৈরি স্ট্রিং বাদ্যযন্ত্র গোটা বিশ্বে বিক্রি করা হয়৷ একটি বেহালা তৈরি করতে ১২০ ঘণ্টা সময় লেগে যায়৷ কারণ, হাতেই সব খুঁটিনাটি কাজ করা হয়৷ আন্টন স্প্রেঙারের দোকান বা প্যোলমান ওয়ার্কশপ এ ক্ষেত্রে বেশ সুনাম অর্জন করেছে৷
বেহালা প্রস্তুতকারক হিসেবে ইয়ুলিয়া ক্লৎস লেওনহার্ট সংস্থায় কাজ করেন৷ আনাড়ি হোক বা পেশাদার, সব শিল্পীর জন্যই আলাদা করে সেখানে বেহালা তৈরি হয়৷ ইয়ুলিয়া বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি বাদ্যযন্ত্রের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ প্রত্যেক বেহালা প্রস্তুতকারকেরও নিজস্ব স্বাক্ষর রয়েছে৷ প্রত্যেকটি বাদ্যযন্ত্র দেখলেই বোঝা যায়, কে তৈরি করেছে, কে রং করেছে৷ একেবারে ভিন্ন দেখতে৷ কোনো দুটি বাদ্যযন্ত্রই একই রকম দেখতে হয় না৷’’
বয়স সবে ৩১ হলেও ইয়ুলিয়া ক্লৎস এই পেশায় যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত৷ কোনো এক সময়ে তিনি তাঁর সৎ বাবার ওয়ার্কশপের উত্তরাধিকারী হবেন৷ সেইসঙ্গে দীর্ঘ ঐতিহ্যেরও বাহক হবেন৷ প্রায় ১০০ বছর ধরে সংস্থাটি সক্রিয় রয়েছে৷
বর্তমানে সেখানে বছরে ৫০টি অনবদ্য বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা হয়৷ এক একটির দাম দেড় থেকে বিশ হাজার ইউরো৷ ইয়ুলিয়া ক্লৎসের সহকর্মী আংগেলিকা ইয়াইস প্রত্যেকটি বেহালা বাজিয়ে পরীক্ষা করেন৷ তারপরই সেগুলি নানা মহাদেশে বিক্রি করা হয়৷ ইয়ুলিয়া মনে করেন, ‘‘প্রত্যেকেই নিজস্ব কোনো বৈশিষ্ট্য, নিজস্ব হস্তাক্ষর রেখে যেতে চান৷ বাদ্যযন্ত্রের উপর খুঁটিনাটী কাজ, ফিডলের আকার, এফ হোল ইত্যাদি৷ কোন কাঠ ব্যবহার করা হবে, সেটাও ঠিক করতে হয়৷ নিজের তৈরি বেহালা গোটা বিশ্বে বাজানো হবে, ভাবলে অবশ্যই ভালো লাগে৷’’
১৭৫০ সালে তৈরি একটি বেহালাও মিটেনভাল্ড থেকে এসেছে৷ কারণ বাভেরিয়া রাজ্যের ছোট এই জায়গাটিতে বহু শতাব্দী ধরে এই ঐতিহ্য চলে আসছে৷ ১৬৮৪ সালে মাটিয়াস ক্লৎস নামের এক বেহালা প্রস্তুতকারক সেই ধারা চালু করেন৷ ইয়ুলিয়া ক্লৎস বলেন, ‘‘আমরা ৩৫০ বছর পরেও সেই ঐতিহ্য অনুযায়ী বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে চলেছি৷ আমাদের উত্তরসূরীরাও আগামী শতাব্দীগুলিতে সেই ধারা বহন করে যাবে বলে আশা রাখি৷’’
বহু দশক ধরে বাভেরিয়ার অপূর্ব নিসর্গ থেকে বাদ্যযন্ত্রগুলি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে৷
ইয়ুলিয়া ক্লৎসের মতো তরুণ প্রজন্মের বেহালা প্রস্তুতকারকরা মিটেনভাল্ডের সেই ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন৷
ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি