জার্মানিতে লবিয়িস্টদের রমরমা
২২ নভেম্বর ২০১৩২২শে সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের পর জার্মানিতে এখনো জোট সরকার গড়ার লক্ষ্যে আলোচনা চলছে৷ দুই বড় দলের সব সাধ-আহ্লাদ মেটাতে যে অর্থের প্রয়োজন, শেষ পর্যন্ত তার সংস্থান হবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷ এরই মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্বার্থরক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে লবিয়িস্টদের দল৷ ওষুধ শিল্প থেকে শুরু করে জ্বালানি সংস্থা – জোট সরকারের কর্মসূচিতে সবাই নিজেদের পছন্দমতো বিষয় দেখতে চায়৷ কারণ তারা জানে, আগামী চার বছর দেশ শাসন করা হবে কোয়োলিশন চুক্তির ভিত্তিতে৷ যা করার, এখনই সেরে ফেলতে হবে৷
বার্লিন ও ব্রাসেলসে লবি গ্রুপগুলির তৎপরতা কম নয়৷ সবাই তাদের প্রভাব খাটাতে ব্যস্ত৷ জনপ্রতিনিধিরা ভোটারদের স্বার্থ দেখবেন, না লবিয়িস্টদের কথা শুনবেন, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই৷ তার উপর লবিয়িস্টরা প্রভাব যে আসলেই কতটা তাও বোঝার উপায় নেই৷ তারা গোপনেই কাজ করতে ভালোবাসে৷ কোন সাংসদের সঙ্গে কতক্ষণ কোন বিষয়ে কথা হলো, সহজে তা বোঝার উপায় নেই৷
প্রচলিত এই লুকোচুরির খেলা বন্ধ করতে অভিনব এক পথ বেছে নিয়েছেন জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সাংসদ মার্কো ব্যুলো৷ কবে, কোথায় কোন লবি সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে কী বিষয়ে কথা হচ্ছে, তিনি তাঁর ওয়েবসাইটে সে সব স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছেন৷ নিজের দলের জ্বালানি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাঁর কাছে অনেকেই দরবার করতে আসেন, তদ্বির করেন৷ নানা বিষয় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়৷ যেমন বলা হয়, কোনো নীতি কার্যকর করা হলে অনেক সংস্থা বন্ধ হয়ে যাবে, অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়বেন৷ খোলামেলা সংলাপের মাধ্যমেও তাঁর উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন লবিয়িস্টরা৷ বিশেষ করে কোয়ালিশন সংক্রান্ত আলোচনার আগে এমন প্রচেষ্টা বেড়ে যায়৷ শুধু কথায় নয়, নিজেদের বক্তব্য লিখিতভাবেও পেশ করা হয়, যাতে সাংসদরা সেই বক্তব্য দলের উপর সারিতে পাঠাতে পারেন৷ লবিয়িস্টদের মধ্যে রয়েছেন অনেক প্রাক্তন আমলা ও সরকারি কর্মকর্তা, যাঁরা প্রশাসনের ভেতরের খবর ভালো করেই জানেন৷ কীভাবে কাজকর্ম চলে, তা তাঁদের নখদর্পণে৷ এমনকি প্রাক্তন মন্ত্রীদেরও লবিয়িং করতে দেখা যায়৷
ব্যুলো অবশ্য জানিয়েছেন, যে ওয়েবসাইটে সব তথ্য প্রকাশ করার কাজ শুরু করার পর থেকে কিছু লবিয়িস্ট তাঁকে এড়িয়ে চলছেন৷ অর্থাৎ স্বচ্ছতা আনতে পারলে জনপ্রতিনিধিদের উপর এমন ‘হামলা' কমতে পারে বৈকি৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ)