জার্মানিতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে রাশিয়ার হুমকি
২৯ জুলাই ২০২৪রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন রোববার জানিয়েছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি জার্মানিতে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে, তাহলে তার দেশও একইরকমের উদ্যোগ নেবে৷
চলতি মাসের শুরুর দিকে ওয়াশিংটন জানায় যে ন্যাটোর প্রতি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ২০২৬ সাল নাগাদ জার্মানিতে দূরপাল্লার এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র জমাতে শুরু করবে দেশটি৷
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে পশ্চিমা শক্তিগুলোর বিরোধ শীতল যুদ্ধের পর সর্বোচ্চ স্তরে গিয়ে পৌঁছেছে৷
মার্কিন-সোভিয়েত পরমাণুবিরোধী চুক্তির সমাপ্তি
‘‘যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তাহলে আমরা নিজেদেরকে অতীতে মাঝারি এবং স্বল্পদূরত্বে আঘাত হানার অস্ত্র মোতায়েন সংক্রান্ত একতরফা স্থগিতাদেশ থেকে নিজেদের মুক্ত মনে করবো৷ তার মধ্যে আমাদের নৌবাহিনীর উপকূলীয় বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টিও রয়েছে,'' সেন্ট পিটার্সবার্গে এক নৌ কুচকাওয়াজে বলেন পুটিন৷
রাশিয়ার এই নেতা জানিয়েছেন যে এসংক্রান্ত প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি প্রস্তুত হয়ে গেলে সামরিক এবং শিল্প লক্ষ্যবস্তুগুলোতে দশ মিনিটের মধ্যে আঘাত হানা যাবে৷
১৯৮৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সম্পাদিত এক চুক্তিতে ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য পরমাণু শক্তিসম্পন্ন মাঝারি মানের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদকালে ২০১৯ সালে এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ দেশটির অভিযোগ ছিল যে রাশিয়া চুক্তিটি ভঙ্গ করেছে৷
যদিও সেসময় মস্কোও সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়, তাসত্ত্বেও পুটিন জানিয়েছেন যে তার দেশ সেই সমঝোতার শর্তগুলো মনে চলা অব্যাহত রেখেছিল৷ তবে জার্মানিতে যদি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয় তাহলে তিনি আর তা মানবেন না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন৷
পারমাণবিক অস্ত্রের নতুন লড়াই?
জার্মানিতে সেই শীতল যুদ্ধের সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সামরিক ঘাঁটি রয়েছে৷ ইউরোপ জুড়ে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্রও মোতায়েন রয়েছে৷ তবে সেগুলো অপেক্ষাকৃত স্বল্পদূরত্বের৷
ওয়াশিংটন এবং বার্লিন এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, নতুন মোতায়েনের মধ্যে এসএম-৬ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন টমহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ‘‘ক্রমবিকাশী হাইপারসনিক অস্ত্র'' রয়েছে৷
জার্মানির সামরিক বাহিনী এই পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বলেছে যে রাশিয়া ইতোমধ্যে পোল্যান্ড এবং লিথুয়ানিয়ার মাঝখানে রুশ ছিটমহল ক্যালিনিনগ্রাদে ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে যেগুলো পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম৷
এধরনের মাঝারি মানের ক্ষেপণান্ত্র জার্মান শহরগুলোকে আঘাত হানতে সক্ষম বলে মনে করছে জার্মানি৷
গতসপ্তাহে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই রাইয়াভকভ জানিয়েছেন যে মার্কিন পদক্ষেপের জবাবে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনর বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না মস্কো৷
এআই/এসিবি (এপি, ডিপিএ)