জার্মানিতে বায়ুশক্তি প্রযুক্তির আরও উন্নতি
৫ ডিসেম্বর ২০১৪জার্মানির বাল্টিক সাগর উপকূলে শীঘ্রই দেখা যাবে এমন টার্বাইন, যার উৎপাদন ক্ষমতা ৩.৬ মেগাওয়াট৷ সিমেন্স উইন্ড পাওয়ার কোম্পানির সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেল এটি৷ এর ‘মেকানিকাল গিয়ার' রয়েছে৷ প্রপেলারের চাকার ‘ন্যাসেল'-এ সেটা বসানো থাকে এবং চাকা ঘুরলে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়৷
পাশের বিশাল হ্যাঙার-এর দিকে নজর দেবার অনুমতি নেই৷ কেউ যদি সেই প্রযুক্তি অন্য কোম্পানির কাছে পাচার করে দেয়! সিমেন্স সেখানে টার্বাইন তৈরি করে, যেগুলির এমন গিয়ারের প্রয়োজনই হয় না৷ চুম্বকের সাহায্যে শক্তি প্রেরণ করা হয়৷ এর মূল্য অনেক বেশি হলেও এই প্রক্রিয়ার বড় সুবিধাও রয়েছে৷ সিমেন্স উইন্ড পাওয়ার কোম্পানির মাইকেল পেডারসেন বলেন, ‘‘জটিলতা কমে যায়৷ গিয়ার টার্বাইনের তুলনায় ডায়রেক্ট টার্বাইনে মেকানিকাল যন্ত্রাংশের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কম৷''
এর অর্থ, আরও কম ওজন, আরও কম ক্ষয়৷ অর্থাৎ আরও কম যন্ত্রাংশ মেরামতি অথবা বদলানোর প্রয়োজন পড়বে৷ সমুদ্রের মধ্যে অফশোর বায়ুশক্তি ব্যবসায় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ, সমুদ্রের বুকে নতুন যন্ত্রাংশ বসানো বা রক্ষণাবেক্ষণের বিশাল ব্যয় মুনাফা অনেক কমিয়ে দেয়৷
সিমেন্স উইন্ড পাওয়ার কোম্পানির প্রধান মার্কুস টাকে লজিস্টিক্স-এর ব্যয়ও অনেকটা কমিয়ে আনতে চান৷ তাই আগে থেকে তৈরি অংশগুলি জুড়ে কাঠামো তৈরির প্রক্রিয়ার উপর জোর দিচ্ছেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘আগে গোটা যন্ত্র কারখানায় তৈরি হতো, তারপর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেটিকে বন্দরে নিয়ে গিয়ে জাহাজে তোলা হতো৷ আজ মডুলার পদ্ধতিতে আলাদা আলাদা অংশ তৈরি করে সহজেই সেগুলি পরিবহন করা সম্ভব৷ বন্দরে অনেক জায়গা আছে৷ সেখানে টার্বাইন জুড়ে ফেলে সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া সহজ৷ ফলে পরিবহনের অনেক জটিল চ্যালেঞ্জ এড়ানো সম্ভব৷''
তা সত্ত্বেও কয়েক টন ভারি থাকবে এই টার্বাইন৷ নতুন প্রযুক্তি তার আরও বিকাশ ঘটাবে৷ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে প্রপেলারগুলিকে আরও বড় করার প্রয়োজন পড়বে না৷ মার্কুস টাকে বলেন, ‘‘নতুন প্রকল্পে ৪ মেগাওয়াট যন্ত্রগুলিতে ১৩০ মিটার ব্যাসের রোটর থাকছে৷ সেগুলির দক্ষতা ১৫ শতাংশ বেশি৷ অফশোর শেষ কথা নয়৷ এর পরের প্রকল্পগুলিতে ৬ মেগাওয়াটের যন্ত্রে ১৫৪ মিটার রোটর থাকবে৷ কিন্তু তার পরেও প্রযুক্তির বিকাশ শেষ হবে না৷''
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সব স্বপ্নের পরেও উৎপাদন ব্যয়ের বিষয়টি সিমেন্স-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ সবচেয়ে সেরা উইন্ড টার্বাইন যথেষ্ট বিক্রি না হলে আর লাভ কী! বিশ্বের বাজারে তখন মাথা তোলার কোনো সুযোগই থাকবে না৷