বিজয় দিবস পালন
১৬ ডিসেম্বর ২০১২রবিবার বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়৷ এরপর মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং অতিথিবৃন্দ৷ পড়ে শোনানো হয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বিজয় দিবসের বাণী৷ অতিথিদের বক্তৃতার পর বার্লিনে বাংলা ভাষা শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ‘বাংলা পাঠশালা'র শিশুদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় ‘আমাদের মুক্তি আমাদের বিজয়' শিরোনামের পথ নাটক৷ নাটকটি রচনা এবং পরিচালনা করেন সাংবাদিক ও লেখিকা নাজমুননেসা পিয়ারী৷
বাংলাদেশের ৪২তম বিজয় দিবসে ডয়চে ভেলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মসুদ মান্নান বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক এই বিজয় দিবসে আমরা মনে করি, বাংলাদেশের আরো এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন৷ আমরা যথেষ্ট এগিয়েছি একথা বলা যাবে না৷ কারণ এখনও আমাদের আরো এগিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে৷ এগিয়ে যাওয়া বলতে আমি জাতিগতভাবে বাঙালি জাতির উন্নয়নের কথা বলছি৷ বাংলাদেশের মানুষদের অগ্রগতির কথা বলছি৷ আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের কোন কোন ক্ষেত্রে যেমন পোশাক শিল্পে বেশ এগিয়েছি৷ আমরা জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছি৷ কিন্তু এর পাশাপাশি আরো অনেকগুলো ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বিকশিত হওয়া উচিত ছিল৷ অথচ গত চল্লিশ বছরে আমরা তা করতে পারিনি৷ যদিও আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ এখন সাক্ষর হয়েছে, তবু আমরা এখনও পুরোপুরি একটি সাক্ষর জাতিতে পরিণত হইনি৷ স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রেও আমাদের বেশ উন্নতি হলেও এখনও অনেক মানুষের জন্য এই সেবা সহজলভ্য করতে আমাদের কাজ করা বাকি৷ যোগাযোগের ক্ষেত্রেও আরো উন্নতি করতে হবে৷ এছাড়া আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে হবে৷ এভাবে সকল ক্ষেত্রে অগ্রগতি করতে পারলেই বাংলাদেশের সব মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে যার জন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন৷''
পথ নাটক ‘আমাদের মুক্তি আমাদের বিজয়' এর পটভূমি সম্পর্কে নাজমুননেসা পিয়ারী বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখানে আছেন৷ যাদের ছেলেমেয়েরা এখানে বড় হচ্ছে৷ প্রবাস জীবনে বড় হওয়া আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে একটি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই নাটকের মধ্য দিয়ে যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ কীভাবে আমাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন৷ বিশেষ করে মহান শিল্পী জজ হ্যারিসন যুদ্ধের সময় যে মেডিসন স্কয়ার থেকে ‘বাংলাদেশ' শিরোনামের গান গেয়ে আমাদের দেশের লড়াকু বীরদের জন্য যে সাহায্য করেছিলেন সেটিই এই নাটকের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷''
এছাড়া বন শহরে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এনআরডাব্লিউ শাখা এবং জার্মান-বাংলাদেশ একাডেমীর উদ্যোগে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷