জার্মানিতে ধাক্কা খেলো চরম দক্ষিণপন্থিরা
৭ জুন ২০২১জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের আগে রাজ্য স্তরের শেষ নির্বাচনকে ঘিরে বাড়তি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল৷ পূবের জনবিরল রাজ্য স্যাক্সনি-আনহাল্টে ভোটগ্রহণের আগে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিলেও বাস্তবে সেটা ঘটে নি৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে আবার জোট সরকার গঠন করতে চলেছে৷ গত নির্বাচনের তুলনায় সাত শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে বরং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে রক্ষণশীল এই দল৷ জাতীয় রাজনীতির উপরে এই ফলাফল কতটা প্রভাব ফেলবে, সে বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক থাকলেও এএফডি দলের শক্তিক্ষয়কে ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক৷ যদিও ভোটের বিচারে তালিকায় দ্বিতীয় স্থান দখল করায় এএফডি এখনও যথেষ্ট জনসমর্থনের প্রমাণ দিতে পেরেছে৷
সেপ্টেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে বিদায় নিচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ কোন দলের নেতৃত্বে আগামী সরকার গঠন করা হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে না৷ ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আরমিন লাশেট ঘরে-বাইরে যাবতীয় সমালোচনা ও চাপ উপেক্ষা করে জয়ের লক্ষ্যে লড়াই করার কথা বলছেন৷ তার নেতৃত্বে দল আদৌ নির্বাচনি সাফল্য পেতে পারে কিনা, সে বিষয়ে সংশয়ের শেষ নেই৷ সম্প্রতি দক্ষিণের দুটি রাজ্যে দল অত্যন্ত খারাপ ফল করেছিল৷ বিশেষ করে সবুজ দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আনালেনা বেয়ারবক জনমত সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় লাশেট বাড়তি চাপের মুখে রয়েছেন৷ এমন পরিস্থিতিতে রোববার স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে দলের জয় লাশেট-কে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে৷ যদিও সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাইনার হাসেলফের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাকেই সেই সাফল্যের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী মাত্র ১২ শতাংশ ভোটার লাশেটের নেতৃত্বের কারণে দলকে ভোট দিয়েছে৷
সিডিইউ দল এমন চমকপ্রদ ফলাফলের কারণে বাড়তি উৎসাহ পেলেও সবুজ দল আগের তুলনায় সামান্য উন্নতি করতে পেরে কিছুটা দমে গেছে৷ পূর্বের রাজ্যগুলিতে সার্বিকভাবে সবুজ দল এখনো তেমন সমর্থন আদায় করতে না পারায় জাতীয় দল হিসেবে আগামী সরকারের নেতৃত্বের সম্ভাবনা প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷
তবে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি ও বামপন্থি দল ‘ডি লিংকে'৷ এসপিডি একের পর এক নির্বাচনে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় কার্যত অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় জাতীয় স্তরেও সাফল্যের সম্ভাবনাও ধীরে ধীরে কমে চলেছে৷ অন্যদিকে পূবের রাজ্যগুলিতেই সাফল্য পেয়ে এসেছে বামপন্থি দল৷ স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে নির্বাচনি বিপর্যয় তাই সেই দলের জন্য বড় সংকট বয়ে আনতে পারে৷
এমনই প্রেক্ষাপটে নড়েচড়ে বসছে জার্মানির রাজনৈতিক দলগুলি৷ সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের আগে জনসমর্থন আদায় করতে ইশতেহার ও প্রচারের তোড়জোড় চলছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)