জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা
২৪ নভেম্বর ২০১২বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার্থী এবং গবেষকদের জন্য জার্মান সরকারের বৃত্তি প্রদানের সেবা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসলেও ২০০৬ সাল থেকে ঢাকায় দপ্তর খুলে সেখানে পরিষেবা আরো সহজতর করেছে ডিএএডি৷ বাংলাদেশে ‘ডাড' নামেই সুপরিচিত সংস্থাটি৷ ডাড এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান সম্প্রতি জার্মানির বন শহরে তাদের কেন্দ্রীয় দপ্তরে পর্যালোচনা সভায় যোগ দেন৷ পরিদর্শন করেন ডিডাব্লিউ এর বাংলা বিভাগ৷ এসময় ডিডাব্লিউ এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘‘ডাড উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিষেবা দিয়ে থাকে৷ তবে বিশেষ করে জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্তর্জাতিক কার্যক্রমে সহায়তা করে ডাড৷ প্রায় চারশ' বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কাজ করি আমরা৷ ফলে যে কেউ আমাদের ওয়েবসাইটে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য একত্রিত আকারে পেতে পারেন৷''
ঢাকায় ডাড-এর পরিষেবা সম্পর্কে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘‘আমরা প্রথমত জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা কিংবা গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পরামর্শ দিয়ে থাকি৷ তবে যেহেতু পরামর্শ ও তথ্য পেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক এবং তা দিনদিন আরো বাড়ছে, তাই তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে কাউন্সেলিং দিতে পারি না বরং এর জন্য নির্ধারিত সময় পেতে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়৷ এছাড়া স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়তে আগ্রহীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে৷ রয়েছে গবেষণার জন্য বৃত্তির সুবিধা৷ আসলে আমাদের মূল প্রাধান্য হলো গবেষণার কাজে বৃত্তি প্রদানের বিষয়টিই৷ বেশ আগে বছরে চার জনকে গবেষণার জন্য বৃত্তি দেওয়া হতো৷ তবে সেটির সংখ্যা বাড়িয়ে এখন বছরে সাত জন গবেষককে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে৷''
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রাজধানী ঢাকায় অনেকগুলো পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান দেখা যায়৷ এসব প্রতিষ্ঠানের পরিষেবা পেতে শিক্ষার্থীদের মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয় এবং অনেক সময় শিক্ষার্থীরা প্রতারিত হয়ে থাকে৷ অথচ ডাড শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে তাদের পরিষেবা দিচ্ছে৷
তাই ডাড-এর পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে হাসান বলেন, ‘‘আসলে বেসরকারি উদ্যোগে যেসব পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের অনেক প্রচার রয়েছে৷ ফলে কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা তাদের কাছে যায়৷ তাদের মধ্যে কেউ সমস্যায় পড়ে আবার সফলও হয়৷ তবে এটা বোঝা উচিত যে, কেউ যদি জার্মানিতে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে চায়, তাহলে তাকে প্রথমেই দেখতে হবে জার্মান সরকারের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান কোনগুলো৷ সেই হিসেবে জার্মান দূতাবাস কিংবা গ্যোটে ইন্সটিটিউটে যেতে পারে৷ তখন তারা ছাত্র-ছাত্রীদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়৷ তবে ডাড-এ অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে কিছুটা সময় লাগে, সেক্ষেত্রে কিছুটা ধৈর্য্য ধরতে হবে৷ এছাড়া আমরা পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি চাহিদার দিকে লক্ষ্য করে বছরে তিন-চারবার বড় বড় ইনফো-সেশনের আয়োজন করি৷ এগুলো কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, গ্যোটে ইন্সটিটিউটে, চট্টগ্রামে কিংবা ঢাকার বাইরেও হয়ে থাকে৷ ফলে সেগুলোতে হাজির হয়ে সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন আগ্রহী শিক্ষার্থীরা৷ অবশ্য আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো, কেউ জার্মানিতে পড়তে যেতে চাইলে দেড় বছর সময় হাতে রেখে প্রস্তুতি শুরু করা উচিত৷ তাহলে সবকাজ ঠিকমতো সম্পন্ন করে কোন সমস্যা ছাড়াই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে৷''
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার্থীদের জন্য ডাড এর পরবর্তী ইনফো-সেশন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ই ডিসেম্বর ঢাকাস্থ গ্যোটে ইন্সটিটিউটে৷