জার্মানিতে টিকা নিতে অনিচ্ছুকদের জন্য লকডাউনের সম্ভাবনা
১৫ নভেম্বর ২০২১জার্মানিতে কার্যত প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণের রেকর্ড ভাঙছে৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার সোমবার এই প্রথম ৩০০ পেরিয়ে গেল৷ বিশেষ করে দক্ষিণ ও পূর্বের কিছু অঞ্চলে সেই হার এমনকি কিছু জায়গায় এক হাজার পেরিয়ে গেছে৷ এই অবস্থায় বিদায়ী ও সম্ভাব্য সরকারের উপর কড়া পদক্ষেপ নেবার জন্য চাপ বেড়েই চলেছে৷ সম্ভাব্য ট্রাফিক লাইট কোয়ালিশনের তিন শরিক দল প্রথমে লকডাউন বা মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কমানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও বাধ্য হয়ে এমন পদক্ষেপের সুযোগ চালু রাখছে৷ ফলে ২৪শে নভেম্বরের পর মহামারিজনিত জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হলেও সরকার ও প্রশাসন করোনা মহামারি মোকাবিলায় কার্যত সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে৷
জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগে করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক চলছে৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, উদারপন্থি এফডিপি ও সবুজ দলের জোট ক্ষমতায় আসার আগেই সংক্রমণ সুরক্ষা আইনে পরিবর্তনের যে প্রস্তাব পেশ করেছে, তার মধ্যে লকডাউনের মতো পদক্ষেপও অন্তর্গত করা হচ্ছে৷ সেই সঙ্গে সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষের উপর চাপ আরও বাড়ানো হচ্ছে৷ এমনকি ট্রাম-বাস-ট্রেনের মতো গণপরিবহন ব্যবস্থা থেকে তাদের বঞ্চিত করার কথাও ভাবা হচ্ছে৷ প্রয়োজনে অন্যান্য ক্ষেত্রেও এমন মানুষের প্রবেশাধিকার বন্ধ করার উপায় থাকবে৷ অর্থাৎ অস্ট্রিয়ার মতো আনুষ্ঠিকভাবে না হলেও কার্যত জার্মানির অনেক অংশে ‘লকডাউন ফর দ্য আনভ্যাকসিনেটেড' চালু করা হতে পারে৷
মূলত উদারপন্থি এফডিপি দলের আপত্তির কারণেই এতদিন নতুন করে লকডাউনের মতো কড়া পদক্ষেপ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থেকে বাতিল করতে হচ্ছিল৷ ইনসিন্ডেসের মাত্রা ৩০০ পেরিয়ে যাওয়ায় সেই দলও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে৷ সপ্তাহান্তে এসপিডি ও সবুজ দলের সঙ্গে আলোচনার পর প্রস্তাবিত নতুন পদক্ষেপগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এই দল৷
সোমবার জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা আবার আলোচনায় বসছেন৷ বৃহস্পতিবার বিদায়ী চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন৷ বিদায়ী ও সম্ভাব্য ফেডারেল সরকার, রাজ্য সরকার এবং সংসদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সংক্রমণের হার কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ ফলে জার্মানির যে সব অঞ্চলের পরিস্থিতি সবচেয়ে গুরুতর হয়ে উঠেছে, সবার আগে সেখানে লকডাউনের মতো পদক্ষেপ কার্যকর করা যাবে৷ তবে অনেক বিশেষজ্ঞের দাবি মেনে গোটা দেশজুড়ে অভিন্ন পদক্ষেপের সম্ভাবনা এখনো ক্ষীণ হওয়ায় বিধিনিয়ম নিয়ে বিভ্রান্তি থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)