জার্মানদের অদ্ভুত গৃহস্থালি উপকরণ
অন্য সব দেশের মতোই জার্মান সংস্কৃতিতেও রয়েছে নানা অদ্ভুত আচার। জার্মানিতে যখন কেউ নতুন বাড়ি কেনে বা ভাড়া নেয়, তখনও কিছু আশ্চর্যজনক জিনিস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেয়।
কিম্ভূত উপহার
হাউজ ওয়ার্মিং বা গৃহপ্রবেশের পার্টিতে কাউকে নিমন্ত্রণ করলে যে উপহারটি আপনি সবার আগে পাওয়ার প্রত্যাশা করতে পারেন, সেটা হচ্ছে রুটি এবং লবণ৷ এই ঐতিহ্যবাহী উপহারের কারণ হচ্ছে, নতুন বাসায় যাতে খাবার এবং স্বাদের অভাব না হয়৷ কিন্তু শত শত বছরের পুরাতন এই ঐতিহ্য উন্নতি, স্থিতিশীলতা এবং ঐক্যেরও প্রতীক৷ অনেকে এসবের সঙ্গে মধু, মোমবাতি এবং ঝাড়ুও উপহার দেন৷
উপহার যখন ডিম ভাঙার যন্ত্র
বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষই হয়তো ফ্রায়িং প্যান বা বাটির পাশে হালকা আঘাতে ডিম ফাটিয়ে অভ্যস্ত। সিদ্ধ ডিমের ক্ষেত্রে অনেকে টেবিলে বা চামচ দিয়ে বাড়ি দিয়ে খোসা ভাঙেন। কিন্তু জার্মানিতে বেশিরভাগ বাড়িতেই অর্ধসিদ্ধ ডিম ফাটানোর জন্য একটি বিশেষ যন্ত্র থাকে। এর জার্মান নাম আইয়ারশালেনসলব্রুখশ্টেলেনফেরউরসাখার, বাংলায় বলা যায় ডিমের খোসা ভাঙার যন্ত্র।
জুতা নিয়ে প্রবেশ নিষেধ
জার্মানিতে কোনো বাসায় ঢোকার আগে অবশ্যই জুতা খুলে নিতে হবে। তবে বাসার ভেতরে অবশ্য আপনাকে খালি পায়ে ঘুরতে হবে না। কারণ বাসার ভেতরে পরার জন্য বেশিরভাগ জার্মান বাসাতেই অতিথিদের জন্য থাকে হাউসশুয়ে বা বাড়ির জুতা। শীতকালে বেশিরভাগ বাসাতেই হিটার চালু থাকে। ফলে পায়ে এমনিতেও ঠান্ডা লাগার কথা নয়। কিন্তু এই জুতাগুলোও বেশ আরামদায়ক।
রান্নাঘরের অলঙ্কার ধারালো চাকু
জার্মান রান্নাঘরে জার্মানিতে ডিজাইন করা চাকু সৌন্দর্য বাড়ায়। জাপানের ধারালো চাকুও জার্মানির চাকুর কাছাকাছি মানেরই। তবে এর দামও অনেক বেশি। জার্মান শহর সোলিংগেন ভ্যুস্টহোফ শেফ নাইফ তৈরির জন্য বিখ্যাত। কয়েক শতক ধরে শহরটির চাকু প্রস্তুতকারকেরা হাতে তৈরি চাকু সরবরাহ করে যাচ্ছেন। চাকু তৈরির আগে ইউরোপ জুড়ে তলোয়ার সরবরাহ করতো শহরটি।
পরিচ্ছন্নতায় ভিনেগার
অন্য নানা দেশে বাসার মেঝে পরিষ্কারের জন্য নানা ধরনের পরিষ্কারক ও ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু জার্মান বাসাবাড়িতে পরিষ্কারক হিসাবে যে পণ্যটির নাম সবার আগে উচ্চারিত হয় তা হচ্ছে এসিশ বা ভিনেগার। নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা যায় এসব ভিনেগারভিত্তিক পরিষ্কারক। তুলনামূলকভাবে প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিকমুক্ত হওয়ায় এর চাহিদা আরো বাড়ছে।
এক বিছানা দুই লেপ
জার্মান শোয়ার ঘরে ঢুকলে অনেকেই আঁতকে উঠতে পারেন। স্বামী-স্ত্রী একইসঙ্গে ঘুমালেও এক বিছানায় দুটো আলাদা কম্বল বা লেপ! এমনটা তো অন্য অনেক দেশে ভাবাই যায় না। কিন্তু অনেক জার্মান ঘুমের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে লেপ নিয়ে টানাটানির চেয়ে আরামে ঘুমানোকেই বেশি প্রাধান্য দেন। ফলে বিছানা একটি হলেও দেখা যায়, স্বামী ও স্ত্রী নিজেদের আলাদা লেপ বা কম্বল ব্যবহার করছেন।