জার্মান শিক্ষা ব্যবস্থার ‘বিশেষ’ খামতি
১৬ মার্চ ২০১৯আইনগতভাবে, জার্মানির প্রতিটি শিশুর রয়েছে শিক্ষার ওপর সমানাধিকার৷ তা সে কোনো অভিবাসী পরিবারের শিশু হোক বা কোনো ‘বিশেষভাবে সক্ষম' শিশু, আইন সবার জন্যেই সমান৷
কিন্ত জার্মানির বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার গঠনের ফলে অনেকাংশেই দেখা যায় যে কিছু শিশুরা পিছিয়ে পড়েন৷ শুধু শারীরিক, মানসিক বা আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিশু নয়, জার্মানির দু'মুখী শিক্ষাব্যবস্থা ক্রমেই হয়ে উঠছে শিশুদের মধ্যে বৈষম্যের কারণ, এমনটাই মনে করেন পাডেরবর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ টিম আলবের্স৷
কেন ব্যর্থ জার্মানি?
দশ বছরের স্কুলশিক্ষার শেষে জার্মানিতে কোনো শিশুকে বেছে নিতে হয় গিউমনাজিউম অথবা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের পথ৷ শুধুমাত্র গিউমনাজিউম পাশ করা ছাত্রছাত্রীরাই পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে হাঁটতে৷ দু'টোর মধ্যে কোনো একটি পন্থাকে বেছে নিতে পারার পেছনেও রয়েছে হাজারো কারণ৷
সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, অভিবাসী পরিবার থেকে উঠে আসা শিশু, যাদের মাতৃভাষা জার্মান নয়, ও বিশেষভাবে সক্ষম শিশুরা শিক্ষার এমন বিভক্ত ধারার ফলে উচ্চশিক্ষা থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে৷
শুধু তাই নয়, প্রতিটি শিশুর বিশেষ পরিস্থিতিকে ভালোভাবে বুঝে, প্রয়োজনীয় শিক্ষার মডেল বানাতে এখনও তৈরি নয় জার্মানি৷
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক ইউলিয়া ফাউলহামারের কথা৷ পিটিএসডি বা ‘পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসওর্ডার'-এ ভোগা ইউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিকূল পরিস্থিতির ফলে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়৷
এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক তাকে এটাও বলেন যে একজন ‘মানসিক প্রতিবন্ধী' ব্যক্তির মনস্তত্ত্ব পড়া উচিত নয়৷ তবুও আশা ছাড়েননি ইউলিয়া৷
কিন্তু ইউলিয়ার মতো ইতিবাচক নন টিম৷ আলবের্স মনে করেন যে অদূর ভবিষ্যতে জার্মানি বোঝাপড়ার এই ফারাকটুকু পেরোতে পারবে না৷
বর্তমান জার্মানিসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মূল লক্ষ্য মানুষের কর্মক্ষমতা বাড়ানো৷
এমন অবস্থায় দেশে বাড়ছে মনোযোগী ও সঠিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব৷ ফলে ইউনেস্কো-র মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের পরামর্শ সত্ত্বেও বর্তমানে জার্মান শিক্ষাব্যবস্থা বিশেষ পরিস্থিতি থেকে উঠে আসা শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত পরিষেবা দিতে অক্ষম৷
এলিজাবেথ শুমাখার/এসএস
জার্মানি কি সত্যিই ব্যর্থ? আপনার মন্তব্য লিখুন নীচের ঘরে৷