জার্মান-ইরানি নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড হলো ইরানে
২৯ অক্টোবর ২০২৪জার্মান-ইরানি দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল জামশিদ শরমদের। ইরানের সংবাদমাধ্যম সোমবার জানিয়েছে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। গত বছর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইরানের ইসলামিক রেভলিউশনারি আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। অভিযোগ, ২০০৮ সালে শিরাজে একটি মসজিদে হামলা চালিয়েছিল এই ব্যক্তি। যে ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার সকালে জামশিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। বস্তুত, তার বিচার চলাকালীন ইরানের গোয়েন্দারা অভিযোগ করেছিল, জামশিদের সঙ্গে সিআইএ এবং এফবিআইয়ের যোগাযোগ ছিল। মোসাদের সঙ্গেও সে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল।
জামশিদের বিরুদ্ধে আরো বড় অভিযোগ আছে। ইরানের গোয়েন্দাদের দাবি, তোন্দার 'সন্ত্রাসী' গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা এই ব্যক্তি। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এই গোষ্ঠী ইরানে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। তারা পুরনো রাজবংশকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে চায় বলে অভিযোগ। সে জন্য তারা ইরানের বর্তমান শাসকের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালাচ্ছে, এমনই দাবি গোয়েন্দাদের। জামশিদ সেই গোষ্ঠীর অন্যতম রিং মাস্টার বলে দাবি করা হয়েছে।
জামশিদ ক্যালিফোর্নিয়াতেই থাকতেন। ২০২০ সালে তাকে দুবাই থেকে অপহরণ করা হয়। এরপর তাকে ইরানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করা হয় বলে জানা গেছে। বস্তুত, ২০২৩ সালে জামশিদকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করার পর তার মেয়ে ডিডাব্লিউকে বলেছিলেন, ''ইরানে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রাজত্ব চালাচ্ছে। আমার বাবার মতো অনেককেই তারা দেশের বাইরে থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়।'' সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অ্যামেরিকা-সহ বহু গোষ্ঠী জামশিদের উপর থেকে মৃত্যুদণ্ড তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। সোমবার জামশিদকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর বার্লিন এটিকে হত্যা বলে বর্ণনা করেছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস এর কড়া নিন্দা করেছেন। জার্মানি জানিয়েছে, ইরান যেভাবে একজন জার্মান নাগরিককে হত্যা করেছে, তা নিন্দনীয়। ইরানকে এর ফল ভুগতে হবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-সহ একাধিক মানবাধিকার সংগঠন এই ঘটনার নিন্দা করেছে। অ্যামেরিকাও এর প্রতিবাদ করেছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)