আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন
২৩ মার্চ ২০১৩দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ,নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখার পরও সরাসরি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হয়নি৷
তাঁর ভাষায়, ‘‘বাংলাদেশ কিন্তু কখনো নির্দিষ্টভাবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি৷ ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৩৮ অনু্চ্ছেদে একটা শর্তাংশ ছিল, যেখানে বলা হয়েছিল, ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক কোনো সমিতি বা সংগঠন করা যাবেনা৷ এ কারণেই কিন্তু জামায়াত পঁচাত্তরের আগে রাজনীতি করতে পারেনি৷’’ ৩৩ বছর পর, এই মুহূর্তেও যে আইন বলবৎ আছে সেটাও খুব স্পষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি, ‘‘২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর পর ৩৮ অনুচ্ছেদে এসেছে সম্পূর্ণ নতুন ধারণা৷
সেখানে বলা হয়েছে, দল নিষিদ্ধ করতে হলে প্রমাণ করতে হবে যে একটা সংগঠন ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে, ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে বা কোনো নাগরিক বা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে৷ এই তিনটাই কিন্তু গঠিত হওয়া বিষয়ের৷ এ মুহূর্তে হাইকোর্টে একটা রিট মোকদ্দমায় তা নিবন্ধের একটা বিষয় বিবেচনাধীন রয়েছে৷ আমি মনে করি বিদ্যমান যে আইনের কাঠামো তা খুব স্পষ্ট নয়৷ তাই সরকারকে ভীষণ ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে বলে আমার মনে হয়৷’’
অস্পষ্টতা দূর করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে একটু সময় লাগতেই পারে৷ কিন্তু সরকার যে সতর্কতা অবলম্বন করে এখনো যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দেশ জুড়ে ভয়ঙ্কর তাণ্ডব চালানো জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য আন্তরিকভাবেই কাজ করছে তা কি সরকার সংশ্লিষ্টদের কথা এবং কাজ দেখে মনে হয়? মিজানুর রহমান খান জানালেন আন্তরিকতার প্রশ্নে সংশয় আছে তাঁর৷ সংশয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বাংলাদেশে সুপরিচিত এই সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন, সরকারের উচিত জামায়াতের সাম্প্রতিক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের বিচার দ্রুত বিচার আদালতে শুরু এবং তার পাশাপাশি নিবন্ধিত এবং সংসদে অংশগ্রহণকারী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া৷