জাপানে মাটির নিচে বন্যা ‘প্রতিরোধ’ ব্যবস্থা
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জাপানের রাজধানী টোকিও প্রায়ই বন্যার ভয়াবহতার সম্মুখীন হচ্ছে। চরম দুর্যোগময় পরিস্থিতির জন্য শহরটির ভূগর্ভস্থ বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
গহীন অন্ধকারে
জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাসুকাবে শহরের মাটির নিচে রয়েছে বিশাল সুড়ঙ্গ ব্যবস্থা। মূলত এই সুড়ঙ্গটিই টোকিওকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে। সুড়ঙ্গটির সুউচ্চ পিলার ও আলোছায়ার মিশেলের কারণে একে গির্জা বা মন্দিরের মতো মনে হয়।
মূল্যবান বিনিয়োগ
ভূগর্ভস্থ বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থাটি ‘মেট্রোপলিটন এরিয়া আওটার আন্ডারগ্রাউন্ড ডিসচার্জ চ্যানেল’ নির্মাণ করতে সময় লেগেছে ১৩ বছর, খরচ হয়েছে ২৩ হাজার কোটি ইয়েন। জাপানের ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে ২০০৬ সালে প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর ১৫ হাজার কোটি ইয়েনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে রাজধানীটিকে।
গভীর সুড়ঙ্গ
ভূগর্ভস্থ বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থাটি টোকিওকে ভারী বৃষ্টিপাত, টাইফুন ও নদীর পানি প্রবাহ থেকে সুরক্ষা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে বিশাল আকৃতির পানির রিজার্ভার ও পাম্পিং স্টেশন। যার মাধ্যমে খুব দ্রুত সময়েই জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করা যায়। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানী সেইটা ইমোরি জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সামনের দিনগুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে এই বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটির উপর চাপ আরও বাড়বে।
বৃহৎ হলঘর
গুহা সদৃশ এই জায়গাটির আয়তন প্রায় ১০০টি অলিম্পিক সুইমিং পুলের সমান। যার মধ্যে ৬০ ফিট উচ্চতার ৫০০ টন ওজনের ৫৯টি পিলার রয়েছে। নিকটস্থ নদীতে পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে তা ৬.৩ কিলোমিটার সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে রিজার্ভারে পৌঁছায়।
দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত
হলঘরে যদি পানি না থাকে সেক্ষেত্রে উৎসুক দর্শনার্থীরা সুড়ঙ্গটির ভিতরে ঘুরে দেখতে পারেন। সেখানে সিনেমার শুটিং হয়৷ছবিপ্রেমীদের কাছেও জায়গাটি খুবপ্রিয়।
ভবিষ্যতের শহর নির্মাণ
টোকিও খুব আধুনিক শহর হলেও পার্শ্ববর্তী নাকাগাওয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে ২০২৩ সালের বন্যায় ৪০০০-র বেশি বাড়ি-ঘরের ক্ষতি হয়েছিল। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও শোধনাগারের আধুনিকায়নে জাপান ৭ বছর মেয়াদী তিন হাজার ৭২৯ কোটি ইয়েন এর প্রকল্পে কাজ করছে।