1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে : এডিবি

২৮ এপ্রিল ২০০৯

জলবায়ু পরিবর্তনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় ৫৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে৷ এদিকে সর্বাধিক কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এক আন্তর্জাতিক বৈঠকে ওয়াশিংটনে মিলিত হয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/HfrF
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেতে পারেছবি: picture-alliance/ dpa

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এক প্রতিবেদনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষের এই মারাত্মক ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেছে৷ সংস্থাটি বলছে, বিশ্বের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ১২ শতাংশ ঐ অঞ্চল থেকে ঘটে৷ তাদের হিসাব মতে, সারাবিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নিলে ২১০০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাবে৷ সোমবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ঐ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ কেননা সেখানে ১৯৫১ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ০.১ থেকে ০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

এছাড়া প্রতিবছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে ১ থেকে ৩ মিলিমিটার করে৷ এডিবি'র মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণ হচ্ছে এর দীর্ঘ উপকূল এলাকা এবং কৃষিখাতের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা৷ ঐ অঞ্চলের ৪৩ শতাংশ শ্রম শক্তি কৃষিখাতে নিয়োজিত৷ এডিবি'র পরিবেশ বিষেশজ্ঞ ডেভিড ম্যাককলি ডয়চে ভেলেকে বলেন : আমরা দেখেছি, যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঐ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরো বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষিপণ্য উৎপাদন হ্রাস পাবে যা দেশগুলোর অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে৷

এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘের একটি দীর্ঘমেয়াদি সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে মৌলিক কাঠামো দাঁড় করাতে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হলো জলবায়ু বিষয়ক বৈঠক৷ বৈঠকে আমেরিকা, চীন ও ভারতসহ বিশ্বের শীর্ষ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী ১৬টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন৷ কিয়োটো প্রোটোকল অনুযায়ী বিভিন্ন দেশকে ২০১২ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নামিয়ে আনতে হবে৷ কিন্তু এরপর কী হবে তা নির্ধারণে আগামী ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন-এ অনুষ্ঠিত হবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পরিকাঠামোগত সম্মেলন৷ ঐ সম্মেলনের জন্য ইতিবাচক পটভূমি তৈরির উদ্দেশ্যেই মূলত এই বৈঠকের আয়োজন৷

Hillary Clinton auf der Klima Konferenz in Washington
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনছবি: AP

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ কিয়োটো প্রটোকলের বিরোধিতা করেছিলেন৷ তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনে সক্রিয় সহযোগিতা করার ব্যাপারে বেশ ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ ওবামা ২০২০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ১৯৯০ সালের তুলনায় ১৫ শতাংশ হ্রাসের পক্ষে৷ সোমবার ওবামা বলেন, কার্বন দূষণ মোকাবিলায় আমাদের সক্রিয়তার উপরেই নির্ভর করছে এই পৃথিবীতে আমাদের ভবিষ্যৎ৷

বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু পরিবর্তন বিরোধী আন্দোলনে পুরোপুরি সম্পৃক্ত এবং এ ধরণের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত৷ এছাড়া ইতিমধ্যে সাধিত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পদক্ষেপ গ্রহণে আমেরিকা বদ্ধপরিকর৷ হিলারি বলেন : বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন সারাবিশ্বের জন্য একটি সুস্পষ্ট বিপদ যা মোকাবিলায় এখনই পদক্ষেপ নেয়া জরুরি৷ তাই বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর গোটা প্রশাসন এ বিষয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷

ইউরোপ সহ অনেক শিল্পোন্নত দেশ কার্বন নির্গমন কমাতে রাজি হলেও চীন, ভারত, ব্রাজিলের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো এ ব্যাপারে এতদিন গড়িমসি করে আসছিল৷ ওয়াশিংটন বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে তাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা গেছে, বলে জানিয়েছেন ইটালির পরিবেশ মন্ত্রী স্টেফানিয়া প্রেস্টিজিয়াকোমো৷

প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন