জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে শস্য উৎপাদনে
২০ এপ্রিল ২০০৯এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঐ অঞ্চলের কিছু অংশে ভয়াবহ বন্যা আবার অন্য অংশে দীর্ঘ সময় ধরে প্রচন্ড খরা বিরাজ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে৷ এমনকি কিছু অংশে জমির উর্বরতা কমে গিয়ে শস্য উৎপাদন হ্রাস পাবে৷ ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ায় বেড়ে যাবে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্য৷
দক্ষিণ আফ্রিকার বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (সিএসআইআর) এর গবেষক কন্সটানসিয়া মাসভোতো বলেন, মোটের ওপর আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের বেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ তিনি বলেন, তাঁদের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৮০ সালের মধ্যে ঐ অঞ্চলের কিছু এলাকায় শস্য উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসবে এবং কিছু অংশ কৃষির জন্য পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে পড়বে৷ তাঁদের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবোয়ে এবং মোজাম্বিক এর কৃষিপ্রধান অঞ্চল বেশি ক্ষতির শিকার হবে৷ মাসভোতো বলেন, দারিদ্র্যের কারণে ঐ অঞ্চলের ক্ষুদ্র কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ তাঁর মতে, ঐ অঞ্চলে শস্য হানি, গবাদি-পশুর রোগ-বালাই বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবিকার অনিশ্চয়তা বেড়েই চলেছে৷
প্রসঙ্গত, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল খাদ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রধানতই কৃষি পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানির উপর নির্ভরশীল৷ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) এ বছরের শুরুতেই সতর্ক করে দিয়েছে, যে এপ্রিলের শেষ নাগাদ জিম্বাবোয়েসহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়বে৷ কেননা ঐ অঞ্চলে মানুষ মানবিক সংকট এবং তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে৷ ভয়াবহ বন্যার কারণে জাম্বিয়া এবং মোজাম্বিক সরকারকে ইতিমধ্যে বন্যাপীড়িত জনগণের চাহিদা পূরণে খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে৷
গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার আশংকা প্রকাশ করে, যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে সেখানে ভুট্টা উৎপাদন ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে৷ উল্লেখ্য, কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খুব বেশি নির্ভরশীলতার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা ঐ মহাদেশে কার্বন নির্গমনে সবচেয়ে শীর্ষে রয়েছে৷ ঐ অঞ্চলের পশ্চিম অংশ ক্রমান্বয়ে শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে৷ অন্যদিকে, পূর্ব অংশে ভয়াবহ ঝড়-ঝঞ্ঝা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারুক