ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে প্রজ্ঞাপন, আদেশ মানেন না ছাত্রলীগ সভাপতি
২৩ অক্টোবর ২০২৪বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে৷ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯'–এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ'কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো এবং এই আইনের তফসিল-২–এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ' নামের ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করলো৷
কারণ হিসেবে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র–ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছেন৷ আরো বলা হয়েছে, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছে৷
এই বিষয়ে ডয়চে ভেলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করে৷ অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘‘এই অবৈধ সরকারের আদেশও অবৈধ৷ তাদের আদেশ মানার প্রশ্নই ওঠে না৷ আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাব।”
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার জবরদখলকারী সরকার৷ এই সরকারের কোনো আইনগত বৈধতা নেই৷ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা তাদের বেআইনি, অসাংবিধানিক গেজেটের কোনো মূল্য আছে বলে মনে করি না৷ এটা এক ধরনের তামাশা৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই সরকারে যারা আছেন তারা যে রাজাকারদেরই প্রতিনিধিত্ব করেন তা তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামে নিবেদিত ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রমাণ করলো৷''
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সশস্ত্র হামলা ও হত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রলীগই হত্যা, গণহত্যার শিকার৷ ছাত্রলীগ শুরু থেকেই কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিল৷ আসলে এই আন্দোলনকে যারা এখন ক্ষমতায় আছে তারা ষড়যন্ত্রমূকভাবে ব্যবহার করেছে৷’’
একই সন্ত্রাস দমন আইনে আওয়ামী লীগের শেষ সময়ে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তারা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি৷ তাদের নিষিদ্ধ করা জাতীয় দাবি ছিল৷’’