চীনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
২৩ অক্টোবর ২০০৮পাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি শুক্রবার ম্যার্কেল অংশ নেবেন ৪৩টি দেশের এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ বৈঠকে৷ যেখানে অর্থবাজারের চলমান সংকটই হবে মুখ্য বিষয়৷
অর্থবাজারের বর্তমান সংকটের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আরো বেশি যৌথ পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ, মনে করে জার্মানি এবং চীন৷ আজ বৃহস্পতিবার বেইজিং-এ চীনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও-এর সঙ্গে আলোচনার পর জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বললেন, আরো বেশি সহযোগিতার সুযোগটা আমরা কাজে লাগাতে চাই৷
চীনা রাজধানীতে এ যাবত্কালের বৃহত্তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ বৈঠক শুরু হবার ঠিক এক দিন আগে দুই দেশই এই মর্মে সহমত প্রকাশ করল যে যৌথ পদক্ষেপ নিয়েই অর্থ বাজারের গভীর সংকটের ক্ষতিকর ফলগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে৷ চীনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন বলেন, বিগত বছরগুলোর টানাপোড়েন সত্ত্বেও দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সামনের দিকেই এগিয়ে চলেছে৷
গত বছর চীনের আপত্তি সত্বেও দালাই লামার সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন চ্যান্সেলর ম্যার্কেল৷ এর প্রতিক্রিয়ায় জার্মানির সঙ্গে বেশ কিছু পুর্বপরিকল্পিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাতিল করে ক্ষুব্ধ চীন সরকার৷ মানবাধিকার নিয়ে দু দেশের মধ্যে ভিন্নমত থাকলেও উভয় পক্ষই অর্থনৈতিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী৷ প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও তাই তাঁর দেশে জার্মানিকে আরও বেশী বিনিয়োগ করারও আহবান জানাতে ভোলেন নি৷ অর্থনীতির পাশাপাশি বিজ্ঞান ক্ষেত্রেও সহযোগিতা জোরদার করতে চান তিনি৷
বিশ্ব অর্থনীতির চলমান মন্দাবস্থা দূর করার জন্য কি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার বেইজিংএ দুইদিন ব্যাপী এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ বৈঠক বা আসেম-এ অংশ নিচ্ছে ইউরোপের ২৩টি ও এশিয়ার ১৬টি দেশ৷ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এই বৈঠকে এক নতুন বিশ্ব অর্থ বাজার ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁর নিজের ধ্যান ধারণাগুলো তুলে ধরবেন৷
অর্থনৈতিক ইস্যুতে একমত হলেও ভিন্নমত কিন্তু রয়ে গেছে মানবাধিকার ইস্যুতে৷ ইতিমধ্যে ইউরোপীয় সংসদ চীনের বিরুদ্ধবাদী মানবাধিকার কর্মী হু জিয়াকে ইউরোপের মানবাধিকার পুরস্কার শাখারভ প্রাইজে ভুষিত করেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ তবে চীনের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তকে সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করা হয়েছে৷ এ ঘটনা এশিয়া-ইউরোপ বৈঠক বা আসেম-এর ওপর কোন প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন জার্মান চ্যান্সেলর৷
এদিকে বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান মন্দাভাব দুর করতে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান হোসে মানুয়েল বারোসো৷ আসেম বৈঠকের ঠিক আগে তিনি বলেছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে একটি সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন৷ আমরা বর্তমানে এমন একটি অবস্থায় রয়েছি যা আগে কখনো ছিলো না তাই সেরকম একটি সহযোগিতাও এখন দরকার৷ বারোসো বলেন, আমরা একসাথে ভাসবো নয়তো একসাথেই ডুববো৷ এক্ষেত্রে চীনকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে বলেও মনে করছেন ইউরোপীয় কমিশন প্রধান৷