গোললাইন প্রযুক্তি
১৭ এপ্রিল ২০১২টটেনহ্যাম হট্সপুরের ম্যানেজার হ্যারি রেডক্ন্যাপ ফের এই প্রশ্নটি তুলেছেন৷ এই গোললাইন টেকনোলজি নিয়ে প্রশ্ন৷ এই তো মাত্র কিছুদিন আগে এফএ কাপের সেমিফাইনালে চেলসির কাছে তাঁর দল যে পেনাল্টিতে পাঁচ-এক গোলে হেরেছে, তার কোন কারণই ঘটত না, যদি না রেফারি মার্টিন অ্যাটকিনসন একখানা বিতর্কিত গোল চেলসির পক্ষে দিয়ে দিতেন৷ যে গোলটা, টটেনহ্যামের দাবি অনুযায়ী আদৌ গোল ছিলনা৷ গোললাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করলে প্রমাণ হয়ে যেত যে রেফারির সিদ্ধান্তে মস্ত ভুল ছিল৷
পরবর্তীতে অ্যাটকিনসন তাঁর ভুল স্বীকার করেছেন, কিন্তু তাতে তো আর খেলার ফলাফল বদলাবে না! আর গোললাইন প্রযুক্তি না থাকায় এরকম কত সময়ে যে এ ধরণের সমস্যা দেখা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে, তার ইয়ত্তা নেই৷ সুতরাং, প্রযুক্তি যখন রয়েইছে, সেটাকে ব্যবহার কেন করা হবে না? এই হল ফুটবল দুনিয়ার যুক্তি৷
কী এই গোললাইন প্রযুক্তি? এ প্রশ্ন উঠলে বলতে হবে বিশদে ব্যাপরটা আসলে কী? ফুটবল মাঠের দুটো গোলপোস্টের মুখে যে লাইনটি টানা থাকে, বল সেই লাইন পেরোলে তবেই গোল বলে ধরা হয় সচরাচর৷ এখন গোলের সময়ে খেলোয়াড়দের জটলা স্বভাবতই গোলমুখে থাকে৷ সেই অবসরে রেফারির চোখ এড়িয়ে বল গোললাইন পেরিয়ে আবার বেরিয়ে এল, এমনও ঘটে খেলার মাঠে৷ আবার উল্টোটাও হয়, বল গোললাইন পেরোয়নি, কিন্তু দাবি উঠল যে সেটা পেরিয়েছিল, তখন রেফারি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন৷ যেমন নিয়েছিলেন এই অ্যাটকিনসন৷
উপায় তাহলে কী? উপায় হল, গোললাইন বরাবর একখানা ক্যামেরা বসানো, যাতে পুঙ্খানুপুঙ্খ ধরা পড়বে বলের গতিবিধি৷ আর দ্বিতীয় পন্থা হল, বলের শরীরে একখনা মাইক্রোচিপ বসিয়ে দেওয়া৷ যে চিপ জানিয়ে দেবে বল গোললাইন পেরিয়েছিল, নাকি পেরোয় নি৷
এই হল সহজ সরল ব্যাপার৷ যা ব্যবহার করলে অনেক ঝামেলাই মিটে যায়৷ কিন্তু, সেই প্রযুক্তি কী ফিফা আদৌ নেবে? নাকি নেবে না? সে নিয়েই এখন আলোচনা চারদিকে৷ ফিফাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সেটাকে তাদের নিজেদের কমিটিতে পাশ করাতে হবে৷ তারপর দেখতে হবে যাতে সর্বত্র এই গোললাইন টেকনোলজির ব্যবহার বাস্তবায়িত হয়৷ তবে যা বোঝা যাচ্ছে, আর যে পরিমাণে চাপ তৈরি হচ্ছে গোললাইন টেকনোলজির দাবিতে, তাতে বেশিদিন ফিফা এটাকে ঝুলিয়ে রাখতে পারবে না বলে মনে করছে ফুটবল দুনিয়ার ওয়াকিবহাল মহল৷ এখন দেখা যাক, সেই অপেক্ষাটা ঠিক কতদিনের!
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, (রয়টার্স, এপি)
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ