খেলার মাঠেই পড়ছে তাদের কু-নজর
২৯ এপ্রিল ২০২২‘নাগরিক সুবিধা’র মানদণ্ড অনুযায়ী তারা বলছে, দুই এলাকায় আর কোনো পার্ক ও মাঠ লাগবে না৷ পুরো ঢাকা এমন হলে এই মহানগরীতে কোনো হাহাকার থাকে না, মা-ছেলেকে থানাবন্দি থাকতে হয় না, মাঠের জন্য কোনো আন্দোলনের দরকার পড়ে না, ঢাকা হয়ে ওঠে সবুজ বনানী আর মাঠে ঘেরা ইউরোপের কোনো এক শহরের মতো৷
সেই ভাগ্য যে ঢাকার নেই৷ জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন মানুষ ছুটছে রাজধানীতে, সেই অসহ্য চাপে তার হাঁসফাঁস অবস্থা৷ বাড়-বাড়ন্ত মানুষের চাপ দেখে আরেক দল সুযোগ সন্ধানী থাকে খোলা জায়গার খোঁজে৷ খোলা জায়গা তো বটেই, এমনকি খেলার মাঠেও তারা বহুতল ভবন তুলে বাণিজ্যের পাঁয়তারা করে৷ ক্ষমতা দিয়ে দখল করে নেয়৷ মাঝে মাঝে গোলও বাঁধে৷ ক্ষমতার চেয়েও বড় হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের ঐক্যের শক্তি৷ সেই জোরে হয়ত আপাতভাবে বেঁচে গেছে কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ৷ ভবিষ্যতে তা বাঁচানো যাবে কিনা কে জানে৷ তবে ইতিহাস বলছে, অনেক খেলার মাঠের অকাল প্রয়াণের গল্প৷
এক সময় ধানমন্ডি ক্লাবের মাঠ ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত৷ একদিকে ছেলেপুলেরা খেলতো, ক্রিকেট-ফুটবল ট্রেনিং চলার পাশাপাশি এলাকার মানুষজন হাঁটাহাঁটিও করতো৷ ২০১৪ সালে এটি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডে রূপান্তরের পর ওই মাঠের উন্মুক্ত দুয়ার বন্ধ হয়ে যায় সর্ব সাধারণের জন্য৷ ক্ষোভ-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসী৷ প্রতিবাদে আন্দোলন ও মানব বন্ধন হয়েছিল৷ ক্লাবের তরফে যুক্তি ছিল, মাঠে বসে কেউ যেন মাদক সেবন করতে না পারে সেজন্য সুরক্ষিত করা৷ তখন মাঠের সামগ্রিক অবস্থা সত্যিই ভালো ছিল না৷ ক্লাব কর্তৃপক্ষ অবস্থার উন্নতি করেছে৷ সেখানে নিজেদের ক্লাব দলের ক্রিকেট ও ফুটবল প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা করেছে৷ এতে ক্লাব প্যাভিলিয়নের সৌন্দর্যবর্ধন হয়েছে, তাদের দলের ট্রেনিং নিশ্চিত হয়েছে, কিন্তু‘ শিঁকেয় উঠেছে এলাকার ছেলেপুলেদের খেলাধুলা৷ অথচ রাষ্ট্রের এই মাঠে তাদেরও খেলার অধিকার আছে৷ আন্দোলনের মুখে কিছুদিন এলাকাবাসীকে নির্দিষ্ট সময়ে সুযোগ দিলেও এখন তা আবার বন্ধ৷
আগে যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকতো, পার্শ্ববর্তী এলাকার ছেলেদেরও খেলার সুযোগ ছিল, এখন সেই সুযোগ নেই৷ বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মো. ইউসুফ আলী নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, ‘‘আমি নিজে বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের মাঠে খেলেছি৷ আশেপাশের এলাকার অনেকে খেলতো এসব মাঠে৷ এখন দেখবেন, বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে খেলার লোক নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের খেলাধুলায় আগ্রহ নেই৷ বেশিরভাগ সময় মাঠ ফাঁকা থাকে, অথচ এলাকার ছেলেরা খেলার মাঠ পায় না৷ আমাদের এলাকায় নবকুমার স্কুলের বিপরীতে আলিয়া মাদ্রাসার বিশাল মাঠে খেলতো অনেক ছেলে৷ সেটা হয়ে গেছে সাব-জেল৷’’
বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের মাঠকে ধরেই ড্যাপের হিসাব বলছে, রমনা-শাহবাগ এলাকা মাঠে পরিপূর্ণ৷ বাস্তবতা হলো, মাঠের এই পরিপূর্ণতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা বাদে অন্যরা নিষিদ্ধ৷ নবকুমার স্কুলের বিপরীতে আলিয়া মাদ্রাসার যে মাঠের কথা বলা হয়েছে, সেখানে আবু ইউসুফসহ অনেক জাতীয় ফুটবলারের শৈশব-কৈশোর কেটেছে৷ এলাকার ছেলেদের রোজকার ক্রীড়ানন্দের জায়গা ছিল এটি৷ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মামলার বিচার কার্যক্রম চালাতে এ মাঠকে অস্থায়ী আদালতে রূপ দেওয়া হয়েছিল৷ মাঠের চারদিকে দেওয়াল তুলে এর মধ্যে বিচার কার্য শেষ হলেও মাঠে শিশু-কিশোরের ক্রীড়া আনন্দের জায়গা আর নেই৷
পুরান ঢাকার একসময়কার পাকিস্তান মাঠ এখন বাংলাদেশ মাঠ নামে পরিচিত৷ এই মাঠের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আশির দশকে পাইওনিয়ার ফুটবল খেলা আব্দুল মজিদ কাজল বলেছেন, ‘পাকিস্তান মাঠে (বাংলাদেশ মাঠ) আমি নিজে পাইওনিয়ার ফুটবল খেলেছি আশির দশকে৷ সেই মাঠের চারদিকে জাল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ পুরো মাঠ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে৷ ওখানে যে বিভিন্ন এলাকার ছেলেরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে খেলতো, সেটি আর দেখা যায় না৷ অন্য সব সুবিধা করতে গিয়ে খেলার মাঠের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে৷’ খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করে কাজল এখন সংগঠক হয়ে দেখেন অনেক খেলার মাঠ হারিয়ে গেছে ঢাকায়, ‘‘মহাখালী টি অ্যান্ড টি মাঠ, বনানী চেয়ারম্যান বাড়ির মাঠ, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন মসজিদ মাঠ, খিলগাঁও জোড়পুকুর মাঠ, কদমতলা মাঠ, নারিন্দা সাদেক হোসেন খোকা মাঠ এখন আর নেই৷ মাঠগুলো দখল হয়ে গেছে, হয় বহুতল ভবন উঠেছে নইতো অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে৷ যেমন, মুগদা রেলওয়ে মাঠে এখন বাস স্ট্যান্ড, অথচ সেখানে আমরা পাইওনিয়ার লিগ খেলেছি৷ বিখ্যাত ধূপখোলা মাঠের অবস্থাও আগের মতো নেই৷’’
ধূপখোলা মাঠ অনেক বড়, একসঙ্গে তিন মাঠের আয়তন৷ পাশাপাশি ক্রিকেট-ফুটবলের ট্রেনিং চলতে কোনো বাধা নেই৷ এক-দুটি দল নয়, প্রায় দেড়-দুইশ’ ছেলেপুলে খেলতো প্রতিদিন৷ বলা হয়, পুরান ঢাকায় খেলোয়াড় তৈরির অন্যতম আঁতুড়ঘর ধূপখোলা মাঠ৷ অনেক জাতীয় ফুটবলার ও ক্রিকেটারের জন্ম এখানে৷ দুই বছর আগে সেটিরও বড় অংশ ঢুকে গেছে সিটি কর্পোরেশনের মার্কেট প্রকল্পে৷ মার্কেট কিংবা সুউচ্চ ভবন ছাড়া কিছুই যেন ভাবতে পারেন না নীতি-নির্ধারকরা৷
অথচ ড্যাপের হিসাব বলছে, পুরান ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্বের তুলনায় মাঠের পরিমান অনেক কম৷ বর্তমানে আছে ১১.৫১ একরের খেলার মাঠ৷ চাহিদা অনুযায়ী মাঠ গড়তে আরো লাগবে ৬৫.০৮ একর জায়গা৷ ওয়ারি-সূত্রাপুরের অবস্থা আরো করুণ৷ দুই এলাকায় খেলার মাঠের পরিমাণ মাত্র ১.৯৪ একর, অর্থাৎ জনসংখ্যার অনুপাতে খেলার মাঠ খুবই নগণ্য৷ সেখানে মাঠের সংখ্যা পর্যাপ্ত করতে আরো লাগবে ২৭.৮৭ একর জায়গা৷ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা দয়াগঞ্জ-গেন্ডারিয়ায় যেসব মাঠ আছে, তার পরিমাণ ৬.৮৬ একর৷ মানুষের অনুপাতে আরো ৬৩.৭৫ একর খেলার মাঠ দরকার৷ দুটো এলাকার জন্য ড্যাপ দিয়েছে আরেকটি বিপজ্জনক তথ্য৷ দয়াগঞ্জ-গেন্ডারিয়ায় কোনো পার্ক নেই!
মাঠের ব্যাপারে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-র সভাপতি ফজলে রেজা সুমন বলেছেন, ‘‘ঢাকার দুটো সিটি কর্পোরেশন মিলিয়ে ১২৯ টা ওয়ার্ডে যে পরিমাণ খেলার মাঠ ও পার্ক আছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব নগণ্য৷ যতটুকু আছে, তার অনেকাংশই দখল দৌরাত্মে পড়ে আমাদের শিশুরা এখন ডিজিটাল মোবাইলে বন্দি হয়ে গেছে৷ ২০০১ সালর সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে বাচ্চাদের ৬০ ভাগ বিনোদনের সময় ব্যয় করে ঘরের ভেতরে৷’’
ঢাকায় পরিকল্পিত ও অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে উঠেছে অনেক আবাসিক এলাকা৷ সেগুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে সুমনের বিশ্লেষণ হলো, ‘‘বাংলাদেশে প্রতি ৫ হাজার মানুষের জন্য এক একর খেলার মাঠ রাখতে পারি৷ কিন্তু ঢাকা শহরে কোনো কোনো ওয়ার্ডের জনসংখ্যা এক লক্ষের উপরে৷ সেখানে যেরকম মাঠ থাকা উচিত সেটা পরিকল্পনা মাফিক রাখা যায়নি, কারণ, এলাকা গড়ে উঠেছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে৷ পরিকল্পনা মাফিক ধানমন্ডি কিংবা উত্তরায় মাঠ রাখা হলেও সেগুলো নিয়ে আদালতে যেতে হয়েছে৷ যেগুলো নকশায় রাখা হয়েছে, সেগুলো পরবর্তীতে বিক্রি বা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে৷ এজন্য শুধু ডেভেলপারদের দায়ী করা যাবে না, দখল দৌরাত্মের মধ্যে রাষ্ট্রও অংশীদার৷ পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা যেমন ধানমন্ডিতে বেশিরভাগই তালাবদ্ধ পার্ক বা খেলার মাঠ, সেখানে তো সবার ঢোকার উপায় নেই৷’’
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামেও হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠগুলো৷ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সঙ্গে লাগোয়া আউটার স্টেডিয়াম ছিল অনেক নামি-দামি তারকার বেড়ে ওঠার মাঠ৷ সাবেক তারকা ফুটবলার আশীষ ভদ্র, সাবেক ক্রিকেট তারকা আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, নাফিস ইকবাল, আফতাব ও হালের সেনসেশন তামিম ইকবালরা এই মাঠে খেলেই জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় দলে৷ সকালে ফুটবলাররা খেললে দুপুর থেকে শুরু ক্রিকেটারদের দাপাদাপি৷ কিশোর ক্রিকেটারদের উঠে আসার মঞ্চ স্টার যুব ক্রিকেটের শুরুই হয়েছিল কাজীর দেউড়ি এলকার পাশে আউটার স্টেডিয়ামে৷ সেসব দিন যারা দেখেছেন, তার পাশ দিয়ে হাঁটলে এখন নস্টালজিয়ায় ভোগেন৷ খেলা ছাড়া আছে নানা পদের স্থাপনা৷ একদিকে সুইমিং পুল, অন্যদিকে মুক্তমঞ্চ, সঙ্গে সৌন্দর্য্যবর্ধনের কিছু আয়োজন৷ খেলার মাঠের সৌন্দর্য হলো খেলায়, সেটিই ভুলে গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন৷
মাঠের অযত্ন-অবহেলায় এখন খেলাধুলার পরিবেশ নেই, খানাখন্দে ভরা মাঠ৷ বৃষ্টি হলে জমে থাকে পানি৷ করোনা সংক্রমণের সময় মাঠে নিত্য উপস্থিতি ছিল অ্যাম্বুলেন্স আর কিছু গাড়ির৷ এছাড়া বিভিন্ন উপলক্ষে মেলা তো লেগেই থাকে আউটারে৷ মেলার ফাঁকে ফাঁকে এক পাশের নেটে কিছু কিশোর ক্রিকেটার ট্রেনিং করে, তবে এটা আউটার স্টেডিয়ামে সেই গৌরবের ক্রীড়াচিত্র নয়৷ খেলার পরম্পরা বাদে বাকি সবই হয় এই মাঠে৷
ব্রিটিশ আমল থেকে পোলোগ্রাউন্ডের ক্রীড়া ইতিহাস শুরু৷ টাইগার পাসে অবস্তিত চট্টগ্রাম রেলওয়ের সেই মাঠ কিছু ঐতিহাসিক ম্যাচের পাশাপাশি স্থানীয় খেলাধুলারও বড় এক মঞ্চ৷ কিন্তু সেটি এখন হয়ে গেছে বাণিজ্য মেলার মাঠ৷ বছরের বড় একটা সময় জুড়ে সেখানে হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা৷ সেটি শেষ হলেও আর খেলার উপায় থাকে না৷ মেলার স্থাপনার কারণে মাঠে পড়ে থাকে পেরেক ও নানা পদের লোহার কাঁটা৷ ইনজুরির ভয় থাকে বেশি, তাই খেলোয়াড়দের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখা যায় না এই মাঠে৷
চকবাজারে প্যারেড মাঠটি চট্টগ্রাম কলেজের নিজস্ব মাঠ হলেও এলাকার কিশোরদের রোজকার ক্রীড়ানন্দের জায়গা৷ পাশাপাশি এটি ছিল শহরের ক্রিকেট-ফুটবল টুর্নামেন্টেরও ভেন্যু৷ তবে খেলার জন্য কখনো এর খুব পরিচর্যা হতো না৷ করোনা মহামারির সময় এই মাঠ হয়েছিল কাঁচাবাজারের জায়গা৷ সেই বাজার গেছে, কিন্তু রেখে গেছে খানাখন্দের নানা চিহ্ন৷ অর্থাৎ, আগের মতো নির্ভয়ে খেলার মতো জায়গা হয়ে ওঠেনি প্যারেড মাঠ৷
রাজশাহী
রাজশাহীতেও বিলীন হয়ে গেছে মাঠের অস্তিত্ব৷ রাজশাহী উপশহরে ছোট-বড় তিনটি মাঠ ছিল এবং তিনটিই হারিয়ে গেছে৷ সবচেয়ে বড় মাঠে প্র্যাকটিস করাতেন ক্রিকেট কোচ মিজানুর রহমান মিলন৷ ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আম্পায়ার আর এখন তার পরিচিতি বিসিবির ম্যাচ রেফারি হিসাবে৷ তবে রাজশাহীতে বেশিরভাগের কাছে তিনি ক্রিকেট কোচ৷ তার আক্ষেপ, ‘‘রাজশাহী উপশহরের তিনটি মাঠেই আর খেলার সুযোগ নেই৷ একটি মাঠ দেওয়া হয়েছে শিক্ষা অফিসকে (ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ). আরেকটি ভাষা সৈনিকদের৷ আমি যে মাঠে ট্রেনিং করাতাম, সেখানে মসজিদ তোলা হয়েছ৷ অথচ এই মাঠে পাইলট (খালেদ মাসুদ), মুশফিক বাবু, জুনায়েদ সিদ্দিকীসহ অনেক ক্রিকেটার কম-বেশি প্র্যাকটিস করেছে৷ ২২ বছর ধরে আমি এ কাজ করে আসছি৷ আমাকে এখানকার লোকজন ‘মিলন স্যার’ হিসাবে চেনে আর ওই মাঠকে বলতে শুরু করেছিল ‘মিলন মাঠ’৷ আমার সুনাম হচ্ছে দেখে হয়তো রাজনৈতিকভাবে এই মাঠ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালে৷ অথচ উপশহর ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংঘ নামে আমাদের ক্লাব আছে, যারা ক্রিকেট-ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলা খেলে৷’’
এছাড়া সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ যেখান থেকে তৈরি, সেই কারাগার মাঠ এখন খেলোয়াড়দের জন্য বন্ধ৷ নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি বৈকালী সংঘ মাঠের দাবি নিয়ে লড়াই করলে সেখানে খেলার সুযোগ বন্ধ করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ৷
পুরো দেশের হিসাব নিলে মাঠ হারিয়ে যাওয়ার গল্প অনেক দীর্ঘ হবে৷ দখলদারের দৌরাত্মে দিনে দিনে খেলার মাঠ যে কমে যাচ্ছে, এটা আসলে সারা দেশেরই বাস্তবতা৷