খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগের দুটি মামলায় বুধবার খালেদা জিয়া ও মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালত৷ বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এই পরোয়ানা জারি করেন৷
ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর কারণে গত ২৯ জানুয়ারি আদালতে না এসে আইনজীবীর মাধ্যমে শুনানির তারিখ পেছানোর আবেদন জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া৷ বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য শোনা হবে৷ কিন্তু ২৫ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ বুধবারও আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়া ও অন্য তিন আসামির জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো৷
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারিও আদালতে উপস্তিত হননি খালেদা জিয়া৷ সেদিন বলা হয়েছিল, সরকার তাঁকে গুলশান কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ' করে রেখেছে, তাই আদালতে যাওয়া সম্ভব নয়৷ বিচারক খালেদাকে সেদিনের হাজিরা থেকে রেহাই দিলেও বাড়তি সময়ের আবেদন নাকচ করে বাদীর সাক্ষ্য চালিয়ে যাওয়ায় আদেশ দেন৷ এ নিয়ে আদালতে সেদিন হৈ চৈ হয়েছে৷ খালেদার আইনজীবীরা বিচারকের প্রতি অনাস্থাও জানিয়েছিলেন সেদিন৷
বুধবার নিজের দল এবং জোটের ডাকা অবরোধর মধ্যেই আদালতে না গিয়ে আবার আইনজীবীদের মাধ্যমে সাক্ষ্য পেছানোর অনুরোধ জানান খালেদা জিয়া৷ কিন্তু আদালত সে আবেদন খারিজ করে টানা কয়েকটি ধার্য দিনে আদালতে হাজির হতে ব্যর্থ হওয়ায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন৷ খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা পরোয়ানা বাতিলের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেয়৷
বিএনপির পক্ষ থেকে সায়রুল কবির খান বার্তা সংস্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘‘চলমান আন্দোলনকে ব্যাহত করার জন্যই এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো৷ কিন্তু এ কৌশলে কাজ হবে না৷ বরং হিতে বিপরীত হবে৷ আমাদের প্রতি জনসমর্থন আরো বাড়বে৷''
২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন৷ তখন দেশে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার৷ আর জিয়া দাতব্য ট্রাস্টে দুনীর্তির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ২০১১ সালে৷
গত ৩ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে অবস্থান করছেন৷ সরকারের দাবি, পুলিশি ‘অবরোধ' তুলে নেয়া হয়েছে, সুতরাং খালেদা জিয়া এখন মুক্ত৷ অথচ সেখানে এখনো পুলিশ প্রহরা রয়েছে৷ দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশের ব্যাপারেও রয়েছে কড়াকড়ি৷ গত কয়েকদিনে সংগীত শিল্পী বেবী নাজনিনসহ বেশ কয়েকজনকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে না দেয়ায় সরকারের দাবির সত্যতা সম্পর্কে জনমনে সংশয় রয়েছে৷
এসিবি/ডিজি (এএফি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)