1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যাসেট আজও মরেনি

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আজকের এমপিথ্রি প্রজন্মের সংগীত অনুরাগীরা কি কখনো গ্রামোফোন রেকর্ড বা ক্যাসেট হাতে নিয়েছে? তবে অতীতের এই সব মিডিয়াম এখনো পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি৷ জার্মানিতে এখনো ক্যাসেট-অনুরাগীর সংখ্যা কম নয়৷

https://p.dw.com/p/2QiKq
গানের ক্যাসেট
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Charisius

লেখক ও সাংবাদিক ইয়ান ড্রেস জানেন, কোথায় এখনো ক্যাসেট কিনতে পাওয়া যায়৷ যেমন বার্লিনের ‘স্টালপ্লাট' দোকানে৷ এখানে গোটা বিশ্বের সংগীতের ক্যাসেট শোভা পাচ্ছে৷ ‘ক্যাসেট ডেক –  একটি প্রজন্মের সাউন্ডট্র্যাক' নামের বইতে ড্রেস অনেক সংগীতকার ও শিল্পীর ক্যাসেট সংক্রান্ত কাহিনি তুলে ধরেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ক্যাসেটের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিস্ময় ছিলো এই যে মানুষ এই প্রথম নিজের পছন্দের সংগীত একত্র করতে পারলো৷ ইউটিউবে আজকের ‘ব্রডকাস্ট ইয়োরসেল্ফ' স্লোগানের আদি রূপ ছিল সেটা৷''

সান্ড্রা হাইনৎসেলমান আজও ক্যাসেটের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে চলেছেন৷ বার্লিনের বিভিন্ন বারে তিনি ‘ডিজেন' ছদ্মনামের আড়ালে ক্যাসেট চালিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন৷ তবে ক্যাসেট ডিজে সেট প্রস্তুত করা বেশ পরিশ্রমের কাজ৷ আগে থেকেই ক্যাসেটে সঠিক গানের অংশ বেছে রাখতে হয়৷ সান্ড্রা বলেন, ‘‘গানগুলি ঘেঁটে দেখতে হয়, যেমনটা আগে সিডি বা রেকর্ডের দোকানে করতে হতো৷ তারপর একটি বার করে সেটি প্লেয়ারে দিয়ে এগিয়ে-পিছিয়ে খুঁজতে হতো৷ হাতে ছুঁয়ে দেখার আলাদা মজা ছিল৷''

 

১৯৬৩ সালে বার্লিনে কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স-এর বাণিজ্যমেলায় নেদারল্যান্ডস-এর ফিলিপ্স কোম্পানি প্রথমবার ক্যাসেট ও ক্যাসেট রেকর্ডার তুলে ধরে৷ প্রথমদিকে সাউন্ড-এর মান তেমন হালো ছিল না৷ তারপর প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বোদ্ধারাও ক্যাসেটের অনুরাগী হয়ে ওঠেন৷

‘মিক্সটেপস', অর্থাৎ প্রিয় গায়কের পছন্দের গান রেকর্ড করা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে পড়লো৷ সঙ্গে মানানসই কভার ডিজাইন৷ ১৯৭৯ সালে সোনি কোম্পানি বাজারে প্রথম ওয়াকম্যান নিয়ে এলো৷ একটা গোটা প্রজন্মের জীবনযাত্রার প্রতীক হয়ে উঠলো ক্যাসেট৷ ইয়ান ড্রেস বলেন, ‘‘ক্যাসেটের মধ্যে সংগীতের এক ধরনের গণতন্ত্রিকরণের বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে৷ বিশেষ করে পূর্ব জার্মানিতে দু'টি বড় রেকর্ড কোম্পানি ছিল৷ সরকারি কর্মকর্তারা স্থির করতেন, কার গান রেকর্ড করা হবে৷ ক্যাসেট আসায় যে কোনো ব্যান্ড সরকারকে এড়িয়ে গান রেকর্ড ও বিতরণ করার সুযোগ পেল৷''

বড় বড় সংগীত কোম্পানির বিপণন কৌশলের তোয়াক্কা না করে কনরাড রোডেনব্যার্গ বার্লিনে ‘ফ্রগি রেকর্ডস' নামের ক্যাসেট কোম্পানি চালাচ্ছেন৷ নিজস্ব গান অথবা বিশ্বের কোনো প্রান্তের ব্যান্ডের গান ক্যাসেটবন্দি করা হয়৷ বড়জোর ২০ থেকে ১০০টি ক্যাসেট তৈরি হয়৷ কনসার্ট বা অন্য জায়গায় হাতে হাতে সেগুলি বিক্রি করা হয়৷ ‘ফ্রগি রেকর্ডস'-এর কনরাড রোডেনব্যার্গ বলেন, ‘‘গান যে কিছুটা ম্লান হয়ে গেছে, তা স্পষ্ট শোনা যায়৷ আমার সেটা বড় ভালো লাগে৷ এই ক্ষয়ের ফলে যেন সেই গান আলাদা একটা চরিত্র পেয়ে যায়৷''

জার্মানিতে এখনো ক্যাসেট-অনুরাগীর সংখ্যা কম নয়

১৯৮৯ সালে গোটা বিশ্বে প্রায় ১৯০ কোটি গানের ক্যাসেট বিক্রি হয়, যা ছিল এক রেকর্ড৷ ২০১৪ সালে সংখ্যাটা ছিল ২ লক্ষের কাছাকাছি৷ ইয়ান ড্রেস বলেন, ‘‘মিডিয়াম হিসেবে ক্যাসেটের স্মৃতিচারণ করার অর্থ হলো, সংগীতের ইতিহাসের এক অধ্যায় নিয়ে চর্চা করা৷ আজ যে সব কমপ্রেশন ফরম্যাটের মাধ্যমে আমরা গান শুনি, তার ক্ষেত্রে এটা খাটবে কিনা আমার জানা নেই৷''

অর্থাৎ ক্যাসেট এখনো পুরোপুরি সেকেলে হয়ে ওঠেনি৷ এই মাধ্যমের সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে৷

ইয়েন্স ফন লারশার/এসবি

দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান