ক্যানাডায় পড়তে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কায় পাঞ্জাবের মানুষ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩পঞ্জাবে শিখদের অনেকে মনে করছেন, সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার ধাক্কা তাদের উপরই এসে পড়বে। তাছাড়া শিক্ষা ও উন্নত জীবনের খোঁজে ক্যানাডায় যাওয়াও তাদের বন্ধ হয়ে যাবে।
খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকে কেন্দ্র করে ভারত ও ক্যানাডার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ, এই হত্যার সঙ্গে ভারত জড়িত। ভারত তা অস্বীকার করেছে।
হরদীপ বছর ২৫ আগে পাঞ্জাবের ভরসিংপুরা থেকে ক্যানাডায় যান ও সেখানকার নাগরিক হন। সেই গ্রামে তার খামারে ট্র্যাক্টরের পাশে কাঠের বেঞ্চে বসে তার কাকা ৭৯ বছর বয়সি হিম্মত সিং নিজ্জর জানিয়েছেন, স্থানীয় মানুষ মনে করেন, ট্রুডো খুব সাহসের কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি বিশাল একটা ঝুঁকি নিয়েছেন।
হিম্মত জানিয়েছেন, ''এখানকার প্রায় প্রতিটি পরিবারই তাদের সন্তানদের ক্যানাডা পাঠাতে চায়। এখন চাষের অবস্থা খারাপ।''
ক্যানাডায় এখন তিন লাখ ২০ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া আছে।
যুবকরা যা বলছে
অমৃতসরে স্বর্ণমন্দির চত্বরে ১৯ বছর বয়সি গুরসিমরান সিং জানালেন, ''আমাদের ভয়টা হলো, ভারত সরকার যদি বাধা দেয়, তাহলে ক্যানাডা আর তাদের ভিসা দেবে না।''
এই স্বর্ণমন্দিরেই স্টুডেন্টস ভিসা পাওয়ার পর পড়ুয়ারা আসে কৃতজ্ঞতা জানাতে। এই স্বর্ণমন্দির চত্বর থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মোকাবিলা করতে সেনা পাঠিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তারপর দুই শিখ দেহরক্ষীর হাতে প্রাণ গিয়েছিল তার।
বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে শিখ কৃষক সংগঠনের সম্পর্কও ভালো নয়। কারণ, তাদের বছরভরের আন্দোলনের ফলে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করতে হয়েছিল মোদীকে।
নিজ্জরের গ্রামে দাঁড়িয়ে ৩১ বছরের সন্দীপ সিং জানিয়েছেন, ''মোদী সরকার একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করেছে। বিশেষ করে যুবকরা এটাই ভাবছেন।''
তিনি জানিয়েছেন, ''আমরা যদি প্রতিবাদ করি, বিক্ষোভ দেখাই তো পরিবারের মানুষ আতঙ্কিত হন। তারা মনে করেন, তাদের বাচ্চাদের অবস্থাও নিজ্জরের মতো হবে।''
চরমপন্থি 'দল খালসা' গোষ্ঠীর রাজনৈতিক সচিব কানওয়ার পালের বক্তব্য, ''যারা খালিস্তানের জন্য লড়াই করছে, তারা আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য লড়ছে, পাঞ্জাবে গণভোটের জন্য লড়ছে। ভারত এই শিখদের শত্রু বলে মনে করে ও টার্গেট করে।''
এই অভিযোগের জবাব দিতে বিজেপি মুখপাত্র অস্বীকার করেছেন। বিজেপি-র প্রবীণ নেতারা জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের মানুষ খালিস্তানের সমর্থক নন। এই ধরনের দাবি ভারতের কাছে বিপদের কারণ। তাদের দাবি, মোদী শিখদের জন্য যা করেছেন, তা আগে কেউ করেননি।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স)