কিছু আশ্রয়প্রার্থীদের কাজের সুযোগ দিচ্ছে জার্মানি
২ নভেম্বর ২০২৩একদিকে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ঢল সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে জার্মানি তথা ইউরোপ৷ অন্যদিকে শ্রম বাজারের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে কর্মী আনার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন কমাতে জার্মান সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কড়া পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছে৷ এরই মাঝে জার্মান মন্ত্রিসভা জার্মানিতে বসবাসরত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ও জার্মানিতে থাকার সাময়িক অনুমতি পাওয়া মানুষদের কাজের সুযোগ দিতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ অনুমোদন করেছে৷ আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর যে সব মানুষ জার্মানি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য, অথচ বিভিন্ন কারণে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না, এমন মানুষদের জন্য সরকারি আতিথেয়তার বদলে বৈধ আয়ের পথ খুলে দিতে চায় জার্মানি৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী ২০২২ সালের শেষে এমন মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় তিন লাখ চার হাজার৷ তাদের মধ্যে প্রায় আড়াই লাখের জার্মানিতে থাকার সাময়িক অনুমতি রয়েছে৷ আপাতত শুধু এই তারিখ পর্যন্ত আসা বিদেশিরাই কাজের সুযোগ পাবেন৷ অন্য কিছু শরণার্থীও নয় মাসের বদলে ছয় মাস পর কাজের অনুমতি পাবেন৷
জার্মান সরকারের পদক্ষেপের আওতায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা অবশ্য এমন সুযোগ পাবেন না৷ অর্থাৎ ‘নিরাপদ' হিসেবে চিহ্নিত দেশগুলি থেকে আসা যে সব মানুষের আশ্রয়ের আবেদন ‘স্পষ্টত ভিত্তিহীন' মনে করা হবে এবং যারা নিজেদের পরিচয় গোপন করছেন, তারা জার্মানিতে কাজের সুযোগ পাবেন না৷ তাছাড়া আবেদন নাকচ হওয়া শরণার্থীদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে সরকার৷
জার্মানির জোট সরকারের অন্যতম শরিক সবুজ দলের এক সংসদীয় নেতা সরকারের এমন পদক্ষেপের ব্যাখ্যা করে বলেন, জার্মানিতে কর্মদাতারা হন্যে হয়ে কর্মীর খোঁজ করছে৷ পৌরসভাগুলির চাপ কমানোর প্রয়োজন বাড়ছে৷ তাছাড়া কাজ করলে মানুষ করদাতা হয়ে ওঠেন৷ নতুন নিয়মের ফলে ঠিক কত সংখ্যক বহিরাগত মানুষ জার্মানির শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ পাবেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার অবশ্য সে বিষয়ে কোনো সংখ্যা বলতে পারেন নি৷
বহিরাগতদের জার্মানির শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ সহজ করার পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে আদম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আরো কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার৷ যে সব মানব পাচারকারী মানুষের জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও তাদের ইউরোপে আনার চেষ্টা করছে, আদালত তাদের দশ থেকে ১৫ বছর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবে৷ এখনো পর্যন্ত তিন থেকে ১৫ বছরের সাজার সুযোগ ছিল৷
বহিরাগতদের ঢল সামলাতে জার্মানির ফেডারেল সরকার রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গেও সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস আগামী সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সে বিষয়ে আলোচনা করবেন৷ বহিরাগদের আশ্রয়ের ব্যয়ভার সামলাতে আরো ফেডারেল সহায়তার দাবি বাড়ছে৷ সেইসঙ্গে রাজ্য ও পৌর কর্তৃপক্ষ আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যার ঊর্দ্ধসীমা স্থির করার জন্য চাপ দিচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)