কার্বন নিঃসরণ ২২ শতাংশ কমাতে চায় বাংলাদেশ
২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ২১.৮৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ৷ এই পরিকল্পনা জাতিসংঘে জমা দেয়া হয়েছে৷
বাংলাদেশের পরিকল্পনা
বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখার চেষ্টায় প্রতিটি দেশ তাদের পরিকল্পনা জাতিসংঘে জমা দিয়েছে৷ বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ২১.৮৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করছে৷ বাংলাদেশ জানিয়েছে, যদি নিঃসরণ কমানোর জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হয় তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০৯.৪ মিলিয়ন টন গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ করবে৷ তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে নিঃসরণ ৩১৯.৯৪ মিলিয়ন টনে নামানো যাবে৷
খরচ
সরকারি সংস্থা সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) এই পরিকল্পনা তৈরি করেছে৷ এটি বাস্তবায়নে ১৫ লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে৷
কে মেটাবে খরচ?
পুরো খরচকে দুই ভাগে ভাগ করেছে বাংলাদেশ৷ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে নিঃসরণ ৬.৭৩ শতাংশ কমাবে৷ এতে খরচ হবে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা৷ বাকি ১৫.১২ শতাংশ উন্নত দেশ বা আর্ন্তজাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া সাপেক্ষে কমানো হবে৷
নিঃসরণ কমাতে যা করবে
প্রয়োজনীয় তহবিল পাওয়া গেলে ৪,১১৪ মেগাওয়াটের নবায়নযোগ্য জালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন, কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, নতুন কমবাইন্ড সাইকেল গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র নির্মাণ, বর্তমান গ্যাস টার্বাইন বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের দক্ষতা বাড়ানো ও প্রিপেইড মিটার বসানো এবং ২০৩০ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদ্যুৎ বিতরণ সংক্রান্ত ক্ষতি কমানোর উদ্যোগ নিতে চেয়েছে বাংলাদেশ৷
বিদ্যুৎচালিত বাস
বড় শহরগুলোতে বিদ্যুৎচালিত বাস সেবা চালু করা হবে৷ এছাড়া যানজট কমানোর জন্য অর্থ ব্যয় করা হবে (জ্বালানি উপযোগিতা ১৫ শতাংশ বাড়বে), রাস্তা প্রশস্ত করা (২ থেকে ৪ লেন) এবং রাস্তার গুণগত মানোয়ন্নন, অযান্ত্রিক যানবাহন তৈরি এবং বাইসাইকেলের জন্য আলাদা লেন, ইলেক্ট্রনিক রোড প্রাইসিং অথবা কনজেশন চার্জিং, রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা কমানো এবং ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড গাড়ি ব্যবহার উৎসাহিত করা হবে৷
কৃষিখাতে উদ্যোগ
কৃষি খাতে ধান খেত থেকে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ কমাতে শুষ্ক মৌসুমে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার এবং শস্য শুকানোর বিকল্প পন্থা ব্যবহার করা হবে৷ ২১ লাখ ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে উন্নত ধানের জাত ব্যবহার করা হবে৷
বনায়ন খাত
বনায়ন খাতে বন ধ্বংস ঠেকানো, বনায়ন উদ্যোগ, বন রক্ষণাবেক্ষণসহ আরও অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে৷
অন্যান্য
পৌরসভাগুলোতে আবর্জনা ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য ৩৬ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে৷ এতে আবর্জনা ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রক্রিয়া চালু করা হবে এবং পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থারও উন্নয়ন কর হবে৷
পরিমাপ
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি দুই বছর পরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু বাস্তবায়িত হলো তা পরিমাপ করা হবে৷