কাগজের তৈরি স্বপ্নের জগত
১৭ অক্টোবর ২০১৬নিপুণ হাতে তৈরি কাগজ অথবা কার্ডবোর্ডের নানা ফিগার ও ফিলিগ্রি অরিগামি৷ ওয়ান্ডা বার্সেলোনা আর্ট স্টুডিও এই কাজে পারদর্শী৷ ভাঁজ বা পেস্ট করা গর্তে-ভরা ইনস্টলেশন দোকানের শো-কেস, ঘর এবং পুরো হলঘরকে কাগজের স্বপ্নরাজ্যে পরিণত করে৷ বার্সেলোনা শহরেরই ৩ শিল্পী মিলে ‘ওয়ান্ডা বার্সেলোনা' স্টুডিওয় কাগজ দিয়ে এই সৃষ্টির কাজ করেন৷ কাগজ তাঁদের বড়ই প্রিয়৷ তাঁদেরই একজন ডানিয়েল মানচিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘উপকরণ হিসেবে অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব৷ সহজেই ভাঁজ করা, আঠা লাগানো যায়৷ বেশ হালকা৷'' ওয়ান্ডা বার্সোলোনার ইন্টি বেলেস বলেন, ‘‘কাগজের মতো সাধারণ বস্তুকে অসাধারণ করে তুলতে ভালোবাসি বলে আমরা প্রতিদিন, সব জায়গায় অসাধারণ কিছু কুঁজে পাই৷''
ওয়ান্ডা বার্সেলোনার তিন সদস্য হলেন স্পেনের ইরিস খোবাল এবং কলম্বিয়ার ডানিয়েল মানচিনি ও ইন্টি বেলেস৷ ২০০৭ সালে তাঁরা এই ডিজাইন স্টুডিও শুরু করেন৷ কিছু সময়ের মধ্যেই তাঁরা হুগো বস-এর মতো ব্র্যান্ডের জন্য কাগজের তৈরি স্বপ্নের জগত সৃষ্টি করতে শুরু করেন৷ যেমন নিউ ইয়র্কের গুগেনহাইম মিউজিয়ামে৷
তাঁরা ক্রিস্টিয়াঁ ডিয়র, অ্যার্মেস, কারোলিনা এরেরা এবং সারা-র জন্যও কাজ করেছেন৷ ইন্টি বেলেস বলেন, ‘‘এই উপকরণ আমরা যত ভালো করে চিনেছি, যত বেশি এ নিয়ে কাজ করেছি, তত বেশি আবিষ্কার করেছি – যেমন এর ক্ষমতা, এর রূপান্তরের কায়দা ইত্যাদি৷ আমরা দেখলাম, এর সীমাহীন সম্ভাবনা রয়েছে৷ তাই কোনো প্রকল্প সম্পর্কে প্রথমে তিন ভাবে ভাবতে হয়৷ স্পেস বা জায়গা, বস্তু এবং অনুভূতি কী হবে, তা বুঝতে হয়৷''
ক্যাটালোনিয়া রাজ্যের রাজধানী বার্সোলোনার কেন্দ্রস্থলেই ওয়ান্ডা বার্সেলোনার স্টুডিও৷ প্রথমে তাঁরা শুধু স্পেনের মধ্যেই কাজ করেছেন৷ এখন তাঁদের অনেক আন্তর্জাতিক গ্রাহক হয়েছে, যাদের মধ্যে বিখ্যাত ব্র্যান্ডের অভাব নেই৷ ইন্টি বেলেস বলেন, ‘‘লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলি আমাদের কাছে আসে, কারণ আমরাই একমাত্র এই কাজ করি৷ আমাদের সৃষ্টির পেছনে যে কারিগরি জ্ঞান ও শৈল্পিক বোধ রয়েছে, তা অনন্য৷ তারা এর মূল্য বোঝে৷ আমরা শুধু একটা টুকরো কাগজ ব্যবহার করি না, আমরা আমাদের সময় লগ্নি করে হাতে করে সেটিকে একেবারে আলাদা কিছুতে রূপান্তরিত করি৷ সাধারণকে অসাধারণ করে তুলি৷ এই সময়, এই শৈল্পিক কাজ ওয়ান্ডাকে অনবদ্য করে তুলেছে৷''
এক সাম্প্রতিক প্রকল্পের জন্য ওয়ান্ডা বার্সেলোনার সদস্যরা জার্মানিতে এসেছিলেন৷ বন শহরে কার্ল লাগারফেল্ড ব্র্যান্ডের জন্য একটি ঘর সৃষ্টি ও ডিজাইনের দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়েছিল৷ জার্মান ডিজাইনারের সৃষ্টির উপর ঝুলছে দোমড়ানো-মোচড়ানো কিছু স্কেচ৷ এই কাজ শেষ করতে ২০ দিন লেগেছে৷ ডানিয়েল মানচিনি বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের পর আমরা সংবাদ মাধ্যম আমাদের বেশ গুরুত্ব দিয়েছে৷ ওয়েবসাইটের তুলনায় সোশাল মিডিয়ায় বেশি সাড়া পেয়েছি৷ এত পরিচিতির ফলে বুঝতে পারছি, যে এই প্রকল্পই সবচেয়ে বড় ছিল৷''
এত ব্যস্ততার মধ্যে কিছু সময় পেলে ওয়ান্ডা বার্সেলোনা প্রডাক্ট ডিজাইনে হাত পাকাতে চায়৷ শোবার ঘরেও কাগজের স্বপ্নময় জগত সৃষ্টি করতে চায় তারা৷
শ্যারন ব্যারকাল/এসবি
দেবারতি গুহ