1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কর ফাঁকি দেয়া জার্মানদের যেভাবে ধরিয়ে দেয় একটি চক্র

ডয়চে ভেলের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম মূলত রাজনীতি, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, শরণার্থী এবং অভিবাসন সম্পর্কিত ইস্যু কভার করেন৷ পাশাপাশি জার্মানি ও ইউরোপে জীবনযাপনের নানা দিকও তুলে ধরেন তিনি৷
আরাফাতুল ইসলাম
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

চলতি শতকের শুরুর দিকের কথা৷ সুইস ব্যাংকে গোপনে টাকা জমিয়ে রেখে কর ফাঁকি দেয়া হাজার হাজার জার্মানের তথ্য ফাঁস করে একটি চক্র৷ সিডিতে থাকা সেসব তথ্য কিনে নেয় জার্মানির কর কর্তৃপক্ষ৷

https://p.dw.com/p/47b11
Symbolbild Wirtschaftskriminalität
ছবি: Imago/blickwinkel

ফলে পরবর্তী কয়েক বছরে বেশ কয়েক হাজার জার্মান ধরা পড়েন কর ফাঁকির দায়ে৷ তাদের অনেকেই স্বেচ্ছায় করফাঁকি দেয়ার কথা স্বীকার করে নেন৷ সুবিধা হচ্ছে এভাবে আগেভাগে দায় স্বীকার করলে শাস্তি অনেক কম হয়৷ তবে, সেজন্য যত টাকা কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে সেই টাকা ছয় শতাংশ সুদসহ ফেরত দিতে হয়৷ সেই সুবিধাই নিয়েছেন অনেকে৷ 

আর তাতে মাত্র কয়েক বছরে জার্মানি সাতশ কোটি ইউরোর মতো অর্থ কর বাবদ পেয়েছে৷ আর সিডি কিনতে খরচ হয়েছিল বিশ লাখ ইউরোর মতো৷

গোপন উৎস থেকে কর ফাঁকি দেয়াদের তথ্যসম্বলিত সিডি কেনা নিয়ে সেসময় জার্মানিতে বিতর্কও হয়েছিল বিস্তর৷ এভাবে কেনা কতটা নৈতিক সেই প্রশ্নও উঠেছিল৷ তবে, আখের ইউরোপের দেশটির লাভই হয়েছিল৷

সেসময় কর ফাঁকি দেয়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ফুটবলার এবং জার্মানির সবচেয়ে বড় ফুটবল ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের প্রেসিডেন্ট উলি হ্যোয়েনেস

কোটি কোটি ইউরো কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে৷ কর যাতে দিতে না হয়, সেজন্য নিজের উপার্জিত টাকা সুইস ব্যাংকে লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি৷ জার্মানিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী এই ক্রীড়াব্যক্তিত্বের এমন খবর অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল৷

অবশ্য জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব হ্যোয়েনসকে শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারেনি৷ বরং কর ফাঁকি দেয়ার কথা স্বীকার করে নেন তিনি৷ আর তার শাস্তি হয় সাড়ে তিনবছর কারাদণ্ড৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

হ্যোয়েনসকে অবশ্য ততদিন সাজা খাটতে হয়নি৷ শাস্তি মেনে নেয়ায় কমদিন সাজা খেটে রেহাই পান তিনি৷ তবে, তার শাস্তি অনেকের জন্য উদাহরণ হয়ে রয়েছে৷

ইউরোপের কেন্দ্রের দেশ জার্মানি দুর্নীতি প্রতিরোধে বেশ সক্রিয়৷ সেটা কর ফাঁকি বা অন্য যেকোন দুর্নীতিই হোক না কেন৷ তাসত্ত্বেও দেশটিতে দুর্নীতি যে একেবারে হচ্ছে না তা কিন্তু নয়৷

বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) পরিচালিত ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২১' অনুযায়ী সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় দশম অবস্থানে রয়েছে জার্মানি৷ এটা থেকে পরিষ্কার যে দুর্নীতি দমনে আরো উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে দেশটির৷ জার্মানির উপরে থাকা দেশগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর ছাড়া বাকিসবগুলোই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ৷

আশার কথা হচ্ছে, এক্ষেত্রে টিআই-এর সুপারিশ অনুযায়ী দুর্নীতরোধে বিভিন্ন আইন মজবুত করছে জার্মানি৷ প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে যাদের দুর্নীতির রেকর্ড অনেক বেশি, তারাও কি টিআই-এর সুপারিশ মানবে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য