নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি রাশিয়া
২১ মার্চ ২০১৪ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার ন্যাটো প্রধান আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন বলেছেন, শীতল যুদ্ধের পর ইউরোপের দেশগুলোর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার বর্তমান পরিস্থিতি৷
ম্যার্কেলের হুমকি
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বলেন, সমস্যা যদি দীর্ঘায়িত হয় তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা ব্যক্তিদের তালিকাটা বড় করা, তাদের অর্থ জব্দ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা৷ শুক্রবার শেষ হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দু'দিনের সম্মেলন৷ এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন ম্যার্কেল৷ ম্যার্কেল আবারো বলেন, ‘‘গণভোট আয়োজন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি৷'' ইউরোপের শক্তিধর অর্থনীতির দেশ জার্মানি এরই মধ্যে রাশিয়ার সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ জার্মানি রাশিয়ার প্রধান গ্যাস আমদানিকারী দেশ৷
রাশিয়ার বক্তব্য
অন্যদিকে ক্রেমলিন অনবরত সতর্ক করে দিয়ে বলছে, পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক নানা সেক্টর রাশিয়ার সাথে জড়িত৷ ফলে রাশিয়ার উপর কোনো ধরনের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তারাও কোনরকম ছাড় দেবে না৷ রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যে কোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য তারা প্রস্তুত৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের ইঙ্গিত, ইরানের পরমাণু ইস্যুতে আলোচনায় তাদের ট্রাম্প কার্ডটি তুলে ধরবে তারা৷
জাতিসংঘের প্রতি কিয়েভের আহ্বান
বুধবার ইউক্রেন ঘোষণা করেছে, মস্কো নেতৃত্বাধীন কমনওয়েলথ অফ ইনডেপেন্ডেন্ট স্টেটগুলোর জোটে থাকবে না তারা৷ ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ক্রাইমিয়াকে ‘ডিমিলিটারাইজড জোন' বা অসামরিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে এবং রাশিয়া তাদের ২৫ হাজার সেনা সেখান থেকে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেয়৷ সেইসাথে ক্রাইমিয়ায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সহায়তা চেয়েছেন তারা৷
রাশিয়া ও ক্রাইমিয়ার কয়েকজন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে৷ তাদের ভিসা শিথিলের ব্যাপারে রাশিয়ার সাথে এরই মধ্যে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইইউ নেতারা৷ ইইউ আপাতত রাশিয়ার ১৩ জন ও ক্রাইমিয়ার ৮ জন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে, যাঁরা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব খর্ব করে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের কয়েকজন উপদেষ্টা, ক্রাইমিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতৃবৃন্দ এবং ইউক্রেনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে৷ এর ফলে তাঁরা ইইউ দেশগুলিতে প্রবেশ করতে পারবেন না, সেখানে তাঁদের বিষয়-সম্পত্তিও তাঁদের নাগালের বাইরে চলে যাবে৷
জি-৭ এর বৈঠক আহ্বান
আগামী সপ্তাহে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে জি-৭ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংস্থা জি-৮ এর সদস্য হলেও ইউক্রেন সংক্রান্ত আলোচনায় দেশটিকে আমন্ত্রণ জানাননি ওবামা৷
এপিবি/এসবি (এএফপি, রয়টার্স)