এর্দোয়ানকে অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্প
১৮ এপ্রিল ২০১৭তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন বোর্ড (ওয়াইএসকে) রবিবারের গণভোটের যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে, তা অনুযায়ী ‘‘হ্যাঁ'' শিবির পেয়েছে ৫১ দশমিক ৪১ শতাংশ ভোট৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবর্গ এর্দোয়ানের এই সংকীর্ণ জয় সম্পর্কে বিশেষ প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন না করলেও, ট্রাম্প সোমবার নিজে টেলিফোন করে এর্দোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ অথচ ট্রাম্পের ফোনালাপের আগে ঐ সোমবারেই মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মার্ক টোনার তুরস্কের ভোটপর্ব সম্পর্কে ওএসসিই-র উদ্বেগের প্রতিধ্বনি করে ভোটের দিনে ‘‘পরিলক্ষিত অনিয়ম'' এবং ভোটের আগের প্রচারপর্বে সুযোগ-সুবিধায় বৈষম্যের কথা বলেছেন৷
আবার ঐ সোমবারেই ট্রাম্পের ফোন কলের আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার গণভোট সংক্রান্ত প্রশ্নটি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন ও শুধুমাত্র বলেন যে, মার্কিন সরকার একটি আন্তর্জাতিক কমিশনকে গণভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করার সময় দিতে চায়৷ ‘‘ওদের ভোট আয়োজনের অধিকার আছে এবং ওদের জনগণ সেই ভোটে অংশগ্রহণ করেছে'', বলেন স্পাইসার৷ ‘‘আমরা ওদের শাসনপ্রণালী নিয়ে আলোচনা করার আগে কমিশনকে তাদের কাজ শেষ করতে দেওয়া উচিত৷''
ওবামার আমলে
এর্দোয়ানের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসুরী বারাক ওবামার সম্পর্ক ধীরে ধীরে ভালো থেকে খারাপের দিকে যায়৷ গোড়ায় ওবামা এর্দোয়ানকে এক নতুন প্রজন্মের মুসলিম নেতাদের সম্ভাব্য প্রতিভূ হিসেবে গণ্য করছিলেন এবং তাঁর প্রেসিডেন্সির প্রথম বছরেই তুরস্ক যাত্রা করেন৷ ওবামার কর্মকালের গোড়ার দিকে উভয় নেতার মধ্যে ঘন ঘন কথাবার্তা হয়েছে৷
কিন্তু এর্দোয়ান যত কর্তৃত্ববাদের দিকে ঝোঁকেন, উভয়ের সম্পর্ক ততই মলিন হতে থাকে৷ গতবছর ওবামাকে বলতে শোনা যায় যে, তুরস্কে এমন সব প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেগুলি সম্পর্কে তিনি‘‘উদ্বিগ্ন'' – যেমন সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ৷
‘‘প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান যে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে বারংবার নির্বাচিত হয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু ওরা পত্রপত্রিকার প্রতি যে মনোভাব নিয়েছেন, তা তুরস্ককে এমন একটি পথে নিয়ে যেতে পারে, যা বিশেষ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে'', বলে মন্তব্য করেন বারাক ওবামা৷
লড়াকু এর্দোয়ান
আংকারার প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে প্রত্যাবর্তনের পর ক্রুদ্ধ এর্দোয়ানকে ওএসসিই-র সমালোচনা প্রত্যাখান করতে দেখা যায়৷ ‘‘নিজেদের জায়গা কোথায়, সেটা মনে রেখো'', ওএসসিই-র মনিটরদের উদ্দেশ্য করে বলেন এর্দোয়ান৷
এছাড়া তিনি তুরস্কের ইইউ-তে যোগদান সম্পর্কেও একটি গণভোট আয়োজনের কথা বলেন – মনে রাখা দরকার, তুরস্ক ১৯৫২ সাল যাবৎ ন্যাটোর সদস্য এবং অন্তত অর্ধশতাব্দী ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদপ্রার্থী৷ মজার কথা এই যে, এর্দোয়ান যুগপৎ তুরস্কে মৃত্যুদণ্ড পুনরায় চালু করার কথা বলেছেন, যা ঘটলে তুরস্কের ইইউ-তে যোগদানের সম্ভাবনার সেখানেই অন্ত ঘটবে৷ সে ধরনের একটি পদক্ষেপ হবে তুরস্কের ‘‘ইউরোপীয় স্বপ্নের'' সমাপ্তি, বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল৷
এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)