এমপি পদ হারিয়েছিলেন ইন্দিরাও
ভারতের সংসদ থেকে এর আগেও বহু রাজনীতিক এমপি পদ হারিয়েছেন। ইন্দিরা থেকে লালু, শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে হেভিওয়েট নেতানেত্রীদের।
ইন্দিরা গান্ধী
ভারতের দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। জওহরলাল নেহরুর মেয়ে। নির্বাচনে কারচুপির অপরাধে ১৯৭৫ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইন্দিরাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। বিচারপতি সিনহার নির্দেশে খারিজ হয়েছিল ইন্দিরার এমপি পদ। যদিও তার প্রধানমন্ত্রী পদ খারিজ করা হয়নি। ইন্দিরা অবশ্য এর কিছুদিনের মধ্যেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। নভেম্বর মাসে সুপ্রিমকোর্ট প্রধানমন্ত্রীর শাস্তিও বাতিল করে দেয়।
লালুপ্রসাদ যাদব
বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ৬৫ বছর বয়সে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত হন। সে সময় তিনি ছিলেন লোকসভার এমপি। আদালতের নির্দেশে লালুর পাঁচ বছরের জেল এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হয়। সঙ্গে ১১ বছরের জন্য সংসদ থেকে নির্বাসিত হন তিনি। অর্থাৎ, এমপি পদ হারানোর পাশাপাশি আদালত জানায়, জেল থেকে বার হয়েও ছয় বছরের জন্য নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না লালু।
জে জয়ললিতা
১৪ বছর তামিনাডুর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জে জয়ললিতা। যদিও তার উত্থান অভিনেত্রী হিসেবে। এআইএডিএমকে-র এই প্রতাপশালী রাজনীতিক ২০১৪ সালে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় অভিযুক্ত হন। চার বছর জেলের পাশাপাশি রাজ্য বিধানসভার এমএলএ পদ হারান জয়ললিতা। বস্তুত, এর পর আর রাজনীতিতে ফিরতে পারেননি তামিলনাডুর আম্মা। ২০১৬ সালে তার মৃত্যু হয়।
আজম খান
উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা আজম খান। উত্তর ভারতের রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী এই রাজনীতিবিদ ২০২২ সালে রাজ্যের বিধানসভা থেকে এমএলএ পদ হারান। হেট স্পিচ বা বিভেদমূলক প্রচারের অভিযোগে ২০২২ সালে তিনি অভিযুক্ত হন এবং আদালত তাকে তিন বছরের কারাবাসের শাস্তি দেয়। এখনো শাস্তি ভোগ করছেন আজম খান।
আবদুল্লাহ আজম খান
আজম খানের পুত্র আবদুল্লাহ আজম খান। সমাজবাদী পার্টির এই নেতাও উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা থেকে তার এমএলএ পদ হারান। ২০২৩ সালে ১৫ বছরের পুরনো একটি মামলায় শাস্তি হয় তার। দুই বছর হাজতবাসের শাস্তি ভোগ করছেন তিনি।
রাহুল গান্ধী
চলতি সময়ে ভারতে সবচেয়ে আলোচিত নাম রাহুল গান্ধী। গুজরাতের একটি আদালত তাকে দুই বছর হাজতবাসের নির্দেশ দিয়েছে। অপরাধ, মোদী পদবির অপমান করেছেন তিনি। শাস্তি ঘোষণার পরেই ভারতের সংসদ থেকে রাহুলের এমপি পদ বাতিল হয়েছে। তবে এখনো তাকে জেলে যেতে হয়নি। আদালত তাকে আপিল করার জন্য ৩০ দিনের জামিন মঞ্জুর করেছে।
বিতর্ক এবং ফলাফল
হেভিওয়েট মন্ত্রী এবং এমপি-এমএলএ-দের সঙ্গে যখনই এমন ঘটনা ঘটেছে, রাজনৈতিক বিতর্ক হয়েছে। রাহুলের শাস্তি এবং তার এমপি পদ চলে যাওয়া নিয়েও সেই বিতর্ক চলছে। উচ্চ আদালত রাহুলের শাস্তি খারিজ করে দিলে অবশ্য ফের এমপি পদ ফিরে পাওয়ার সুযোগ আছে রাহুলের। যেমন পেয়েছিলেন তার ঠাকুমা, ইন্দিরা।
আছে আরো নাম
এই নেতা-মন্ত্রীদের পাশাপাশি কম পরিচিত আরো অনেক নাম আছে, বিভিন্ন সময়ে যারা এমপি এবং এমএলএ পদ হারিয়েছেন। লাক্ষাদ্বীপের এমপি মহম্মদ ফয়জল, বিহারের এমএলএ অনন্ত সিংহ, হরিয়ানার এমএলএ প্রদীপ চৌধুরী, কংগ্রেস এমপি রশীদ মাসুদ আইনসভা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। মুজফফরনগর দাঙ্গার জন্য শাস্তি পেয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি এমএলএ বিক্রম সিং সাইনি। ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত এমএলএ কুলদীপ সিং সেনগর এমএলএ পদ হারিয়েছেন।