একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও, সংঘর্ষ থামেনি গাজায়
১৮ জানুয়ারি ২০০৯ইসরায়েলের এক সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, রবিবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘন্টা পর জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এক ইসরায়েলী সেনাকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি ছোড়ে হামাস৷ এ সময় কমপক্ষে পাঁচটি রকেট ইসরায়েলের দক্ষিনে অবস্থিত ডেরথ শহরে আঘাত হানে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলী সেনাবাহিনী৷ আর তার জবাবে ইসরায়েলী জঙ্গি বিমানগুলি গাজার বেইত হানুন এলাকায় বোমা বর্ষণ করে বলে জানায় হামাস৷
হামাস জানায়, জাবালিয়া থেকে চলে যাওয়া ইসরায়েলী সেনাদের সঙ্গে তাদের স্বল্পকালীন সংঘর্ষ হয়৷ এরপর গাজায় ইসরায়েলী সেনাদের উপস্থিতি মেনে না নেওয়ার এবং প্রতিরোধ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে হামাস৷ হামাস দলের মুখপাত্র ওসামা হামদান জানান : ইসরায়েলী সেনারা গাজা থেকে পুরোপুরি সরে না যাওয়া পর্যন্ত, এই যুদ্ধবিরতি আমরা মেনে নিতে পারি না৷ কেউ আমদের থামাতে পারবে না৷ এটা অলমার্টের বোঝা উচিৎ৷
অন্যদিকে, ইসরায়েলী নেতারা বলেন, হামাস লড়াই চালিয়ে গেলে ইসরায়েলী সেনারা তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে৷ তাই হামাস ও ইসরায়েলী সূত্রানুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলী সেনা ও হামাস সদস্যদের মধ্যে এখনো গুলি বিনিময় চলছে৷
এর আগে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের মধ্যস্থতায় এই একপাক্ষিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল৷ শনিবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী এহুদ অলমার্ট বলেন : অভিযান শুরু আগে যে লক্ষ্য ছিল শেষে তার চেয়েও বেশি অর্জিত হয়েছে৷ জঘন্যভাবে পরাজিত হয়েছে হামাস৷
তবে এই ঘোষণা দেওয়ার পরও, ইসরায়েলী সেনারা গাজায় অবস্থান করবে বলে জানান ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী এহুদ অলমার্ট৷ শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধ করতে চাইলে তাদের ওপর আবারও আক্রমণ করা হবে জানান তিনি৷
এদিকে, ইসরায়েলের একতরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বাগত জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ই.ইউ.-র বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিশনার বেনিতা ফেরেরো ওয়াল্ডনার বলেছেন, গাজাবাসীদের জন্য ই.ইউ. এবং অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলি যাতে মানবিক সহায়তা নিয়ে যেতে পারে সেজন্য এ যুদ্ধবিরতি অপরিহার্য ছিল৷ এছাড়াও, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার হামাসকে ইসরায়েলে রকেট হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান৷ কিন্তু এতো কিছুর পরও, এই একতরফা যুদ্ধবিরতি যে আদতে গাজা অভিযানে বিজয় নয় - তা বলাই বাহুল্য৷ তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আগামী এক সপ্তাহ কোনরকম হামলা থেকে বিরত থাকার কথা জানিয়েছে হামাস৷