এক স্কুল, এক শিক্ষক, এক ছাত্র
রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম সিবিলিয়াকভো৷ সেখানকার প্রাথমিক স্কুলে একজন শিক্ষক তাঁর একমাত্র ছাত্রকে পড়ান৷ আগামী বছর স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাবে৷
স্কুলের প্রথম দিন
২ সেপ্টেম্বর স্কুলের প্রথম দিন ছিল৷ ছবিতে ৬১ বছর বয়সি শিক্ষক উমিনুর কুচুকোভা ও তাঁর নয় বছর বয়সি একমাত্র ছাত্র রাভিল ইঝমুখামেতোভকে দেখা যাচ্ছে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধের শহিদদের প্রতি সম্মান জানাচ্ছেন তাঁরা৷
একমাত্র ছাত্র
স্কুলের প্রথম দিনের ক্লাসে রাভিল৷ পেছনে তার পরিবারের সদস্যদের দেখা যাচ্ছে৷
লোকজন চলে গেছে
সোভিয়েত আমলে সরকার পরিচালিত খামার থাকায় সিবিলিয়াকভো গ্রামে অনেক লোকের বাস ছিল৷ এরপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ায় লোকজন গ্রাম ছেড়ে শহরে যাওয়া শুরু করে৷ ফলে আগে যেখানে গ্রামের লোকসংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচশ, এখন সেটা এসে দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে৷
শিক্ষার্থীও নেই
পরিবার না থাকায় শিক্ষার্থীরাও নেই৷ তাই একসময় যেখানে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শ্রেণির প্রতিটিতে প্রায় ১৮ জন করে শিক্ষার্থী থাকতো, এখন সেটা মাত্র একজনে এসে দাঁড়িয়েছে৷ ছবিতে প্রথম দিন স্কুলে যাওয়ার আগে রাভিলকে গোসল করতে দেখা যাচ্ছে৷
অবসর নিতে পারছেন না
শিক্ষক উমিনুর কুচুকোভার অবসরের বয়স হয়ে গেছে আগেই৷ কিন্তু রাভিল থাকার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি৷ রাভিলের কৃষক বাবা-মা এই মুহূর্তে গ্রাম ছেড়ে যেতে চান না৷ আর বয়স কম হওয়ায় রাভিলের পক্ষে দূরের স্কুলে যাওয়াও সম্ভব নয়৷ ছবিতে রাভিল ও তার বড় বোনকে দেখা যাচ্ছে৷
তবে আগামী বছর...
রাভিলের বয়স এখন ৯৷ কুচুকোভা বলছেন, আগামী বছর থেকে সে দূরের স্কুলে যেতে পারবে৷ তখনই তিনি অবসর নেবেন, আর সেই সঙ্গে স্কুলটিও বন্ধ হয়ে যাবে৷ প্রায় ৪২ বছর কাজ করেছেন যে স্কুলে সেটি বন্ধ হয়ে যাবে, ভাবতেই খারাপ লাগে তাঁর৷ ছবিতে রাভিলকে দাদির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে৷
স্কুলের পথ
আগামী বছর রাভিলকে স্কুলে যেতে প্রথমে নৌকা করে আধ ঘণ্টা পথ পাড়ি দিতে হবে৷ তারপর স্কুলবাসে করে যেতে হবে ২০ মিনিট৷
সহপাঠী ছাড়া ক্লাস
এভাবে ক্লাস করতে কেমন লাগে জানতে চাইলে রাভিল বলে, সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাস করতে কেমন লাগে তা তার জানা নেই, তাই পার্থক্যটা সে বুঝতে পারছে না৷ তবে ভবিষ্যতে সে কারও বন্ধু হতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছে৷ ছবিতে বাবার সঙ্গে রাভিল৷