উপন্যাস থেকে ছায়াছবি

বিমল মিত্রের উপন্যাস থেকে ১৯৬২ সালে তৈরি হয় হিন্দি ছায়াছবি ‘সাহেব বিবি গোলাম’৷ তবে তার ১০ বছর আগে একই গল্প থেকে একই নামে তৈরি হয়েছিল বাংলা ছবিও৷ ২০১৬ সালে আরেকটি বাংলা ছবি নির্মাণ করা হয়েছে বিমল মিত্রের ওই উপন্যাস অবলম্বনে৷

১৯৬৫ সালে লেখক আর কে নারায়নের উপন্যাস ‘দা গাইড’ অবলম্বনে তৈরি হয় ‘গাইড’ ছবিটি৷ হিন্দি ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিতেও এই ছবিটি নির্মাণ করা হয়৷ কিন্তু ইংরেজি ছবিটি হিন্দি ছবিটির মতো অতটা সাড়া ফেলতে পারেনি৷

১৯১৭ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘দেবদাস’ উপন্যাস থেকে তৈরি হয় একাধিক ছবি৷ বিভিন্ন শিরোনামে ও ভাষায় মোট ১৯বার রূপোলি পর্দায় উঠে এসেছে এই উপন্যাসের গল্প৷ প্রমথেশ বড়ুয়া, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ কুমার থেকে প্রসেনজিৎ বা শাহরুখ খান– ‘দেবদাস’ ছবির নামচরিত্রে অভিনয় করেছেন বিভিন্ন সময়ের প্রথম সারির অভিনেতারা৷

‘দেবদাস’ ছাড়া শরৎচন্দ্রের আরো কিছু উপন্যাস পর্দায় ছায়াছবিতে রূপান্তরিত হয়েছে৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘পরিণীতা’ ছবিটি৷ ১৯১৪ সালে তাঁর লেখা ‘পরিণীতা’ উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা, হিন্দি ও তামিল ভাষায় মোট পাঁচটি সিনেমা তৈরি হয়৷

হিন্দি গল্পকার মুনশী প্রেমচান্দের ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ গল্পের ওপর ভিত্তি করে ১৯৭৭ সালে সত্যজিৎ রায় তৈরি করেন একটি হিন্দি ছবি৷ আমজাদ খান, সঞ্জীব কুমারের মতো তারকারা অভিনয় করেছিলেন সেই ছবিতে৷

সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বিভিন্ন উপন্যাস বা নাটক অনুপ্রাণিত করেছে একাধিক চলচ্চিত্রকে৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশাল ভরদ্বাজের পরিচালনায় নির্মিত ‘মকবুল’, ‘ওমকারা’ ও ‘হায়দার’ ছবিগুলি৷

ভারতীয় লেখক চেতন ভগতের ‘ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান’ উপন্যাসের গল্প থেকে তৈরি হয় জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘থ্রি ইডিয়টস’৷ একই লেখকের আরো অন্যান্য উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে ‘হ্যালো’, ‘কাই পো চে’ ও ‘টু স্টেটস’ ছবিগুলিও৷ তাঁর উপন্যাসের মতোই বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল এই ছবিগুলি৷

ইংরেজি গল্প থেকে হিন্দি ছবি খুব বেশি না হলেও কয়েকটি উদাহরণ দেওয়াই যায়৷ প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনীত ‘সাত খুন মাফ’ ছবিটিও সেভাবেই বানানো হয় ভারতীয় সাহিত্যিক রাস্কিন বন্ডের ইংরেজি উপন্যাস ‘সুজানস সেভেন হাজবেন্ডস’-এর গল্পের ওপর ভিত্তি করে৷

সত্যজিৎ রায়, ঋতুপর্ণ ঘোষ, সুমন মুখোপাধ্যায় থেকে তপন সিনহা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস থেকে ছায়াছবি বানিয়েছেন বিভিন্ন প্রজন্মের চিত্রপরিচালকেরা৷ তাঁদের উল্লেখযোগ্য কিছু ছবি, যেমন, ‘ঘরে বাইরে’, ‘চোখের বালি’, ‘নৌকাডুবি’, ‘চারুলতা’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘অতিথি’ দর্শকের মনে গাঁথা রয়েছে আজও৷

সত্যজিৎ রায়ের কলম থেকে উঠে আসা গোয়েন্দা চরিত্র ‘ফেলুদা’ তাঁরই পরিচালনায় বড় পর্দায় জায়গা করে নেয়৷ পরে তাঁর পুত্র সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় তৈরি হয় ‘ফেলুদা’ সিরিজের আরো কিছু ছবি৷ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সী-ও হিন্দি টেলিভিশন থেকে টলিউডের ছবি সর্বত্র সমানভাবে জনপ্রিয় হয়েছে৷