‘ইসলামি বিশ্ব তাদের ‘ভালো' মুসলমান মনে করে না'
২০ মে ২০১৫সাংবাদিক মৌমিতা জান্নাত ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘একসময় নৌকা ভরে ভরে রোহিঙ্গা আসতো আমাদের বন্দরে৷ কোনো ধরনের মমতা না দেখিয়ে ক্ষুধার্ত, প্রাণ ভয়ে বিপন্ন মানুষগুলোকে বন্দুকের মুখে আবার সমুদ্রে ফিরিয়ে দিয়েছি আমরা৷ এখনো হাজার হাজার রোহিঙ্গা (বাঙালিও আছে সাথে) খোলা সাগরে অসহায় নিরন্ন হয়ে ভাসছে৷ সব ধরনের, সব দেশের মানবিকতার দরজা বন্ধ ওদের জন্য৷ কারণ ওরা রোহিঙ্গা!!!! জানি আমাদের মতো দরিদ্র একটি দেশের জন্য রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান অনেক জটিল৷ কিন্তু ভয়ংকর অসহায় চেহারার বাচ্চাগুলোর দিকে তাকালে কেনো নিজের বাসার বাচ্চাটার কথাই মনে আসছে? বাকি মানুষগুলোকে কেনো মানুষই মনে হচ্ছে? কেন রোহিঙ্গা মনে হচ্ছে না?''
কল্লোল মোস্তফা লিখেছেন, ‘‘রোহিঙ্গা না ওরা বাঙালি? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার৷''
সাংবাদিক নঈম তারিক ফেসবুক পাতায় স্ল্যাভয় যিযেকের বক্তৃতাসহ একটি ইউটিউব ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘হিস্টরি অব ভায়োলেন্স প্রজেক্টে ডিসপোজেবল লাইফ নামে স্ল্যাভয় যিযেকের একটি বক্তৃতা ইউটিউবে ভেসে বেড়াচ্ছে৷ তাতে, যিযেকের মতে, গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমের বাইরে থেকে যাওয়া মানুষ এক কথায় ডিসপোজেবল, মানে উচ্ছিষ্ট৷ আন্দামান সাগরে ভেসে বেড়ানো মানুষগুলোও তাই, কিন্তু ভূমধ্যসাগরে ভাসছে যারা- তাদের অবস্থা এতোটা খারাপ নয়৷ আন্দামান সাগরে ভেসে থাকা মানুষের মধ্যে বাংলাদেশিদের উচ্ছিষ্ট বলা চলে কিনা সে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে৷ কিন্তু মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা যে ডিসপোজেবল তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, মিয়ানমার তাদের স্বীকার করে না, ইসলামি বিশ্ব তাদের ‘ভালো' মুসলমান মনে করে না৷''
আল-শাহ্রিয়ার সামহয়্যারইন ব্লগে লিখেছেন, ‘‘বর্তমানে সব থেকে দুর্ভাগ্যজনক সংবাদ হলো অবৈধ পথে মালয়েশিয়া গমন করতে গিয়ে লাশ হয়ে সমুদ্রে ভেসে যাওয়া৷ কয়েক হাজার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গারা প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ মৃত্যুর অপেক্ষায় প্রহর গুনছে মাঝ সাগরে অবস্থান করে৷... সবথেকে কষ্টকর ব্যাপার হলো আমাদের দেশের মানুষ মরছে অথছ সরকারের কোনো মাথাব্যাথা আছে বলে মনে হয় না৷''
জিয়া উদ্দিন আহমেদ একই ব্লগে লিখেছেন, ‘‘অনেকের মতে, রোহিঙ্গারা হলো ‘বিশ্বের অন্যতম নির্যাতিত জনগোষ্ঠী'৷ আরাকান রাজ্যে বসবাসকারী ১৩ লাখ রোহিঙ্গার জাতীয়তাও নেই৷ তাদের একমাত্র অপরাধ তারা মুসলমান৷ নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরেই তারা বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছে৷ জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরই প্রায় ২৫ হাজার রোহিঙ্গা আরাকান ছেড়েছে৷''
টুইটারে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে শান্তিতে নোবেলজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সূ চির অবস্থান নিয়ে৷
তারিন উইলসন সিএনএন এর একটি প্রতিবেদন শেয়ার করে লিখেছেন, রোহিঙ্গা নিয়ে অং সান সূ চি কেন নিশ্চুপ?''
তান কেং রিয়াং লিখেছেন, ‘‘আমার মতে অং সান সূ চিকে নোবেল দেয়া উচিতই হয়নি৷ তাঁকে আসলে মানবাধিকার অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার দেয়া উচিত৷''
তিয়ান চুয়া লিখেছেন, রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখে এবং সূচির অবস্থানে হতাশার কারণে ডক্টর সিতি মারিয়া চোখের পানি আটকাতে পারেননি৷
ফিল রবার্টসন এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সূ চির মুখ খোলা উচিত৷''
অ্যান্ড্রু স্ট্রহেলাইন গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি সংবাদ শেয়ার করেছেন, যেখানে সূ চির দলের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷
জামিলা হানান লিখেছেন, ‘‘থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া যদি রোহিঙ্গাদের ঠাঁই না দিতে চায়, তাহলে তাদের উচিত মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো৷''
মারুফ রসুল লিখেছেন, ‘‘আমি বুঝতে পারি না মানবতার প্রশ্নে মালয়েশিয়ার বদলে মিয়ানমারকে কেন চাপ দিচ্ছে না জাতিসংঘ?''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: জাহিদুল হক