জলবায়ু পরিবর্তন
৩০ আগস্ট ২০১৫তাঁরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করাটা নাকি প্রত্যেক মুসলমানের ধর্মীয় দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ সেজন্য জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব ফেলে এমন জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে, অভ্যাস পাল্টাতে ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে বিশ্বের ১৬০ কোটি মুসলমানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঐ ইসলামি পণ্ডিতরা৷
শুধু একক ব্যক্তি নয়, দেশ হিসেবে তেল উৎপাদনকারী মুসলিম দেশগুলোকেও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরবও এই অনুরোধের মধ্যে পড়ছে৷ তাহলে কি সৌদি আরব এই অনুরোধ রক্ষায় কাজ শুরু করবে? নাকি মুষ্টিমেয় কয়েকজন ইসলামি পণ্ডিত কি বললো, না বললো তাতে কিছু যায় আসে না – এমন মনোভাব দেখাবে? আমি নিশ্চিত, দ্বিতীয় কাজটিই করবে সৌদি আরব৷ কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অর্থনীতি৷ তাছাড়া কোরআন কিংবা হাদিসেতো আর জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সরাসরি কোনো কথা বলা নেই৷ তাহলে কেন শুধু শুধু কয়েকজন পণ্ডিতের কথা শুনে আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হতে যাবে সৌদি আরব?
এভাবে চিন্তা করলে হয়ত মনে হবে সৌদি আরবের সিদ্ধান্তই ঠিক৷ কিন্তু সরাসরি না হলেও কুরআনে কিন্তু প্রকৃতিকে রক্ষার কথা বলা হয়েছে৷ যেমন সূরা আর রহমান-এর একটি আয়াত বলছে, ‘‘মানুষের ব্যবহারের জন্যই পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, তবে সেটা করতে হবে সতর্ক হয়ে৷'' আর সূরা আল বাক্বারাহ-য় বলা আছে, ‘‘তোমরা পৃথিবীর অনিষ্ট করো না৷''
কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা মানে পৃথিবীকে একরকম অনিষ্টর দিকেই ঠেলে দেয়া৷ তাই আজ হোক, কাল হোক মুসলিম বিশ্বকে এই বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে৷ সেটা যত তাড়াতাড়ি হবে পৃথিবীর জন্য ততই মঙ্গল৷ মুষ্টিমেয় কয়েকজন ইসলামি পণ্ডিতের আহ্বান যদি মুসলমানদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া যায় তাহলে কাজটা দ্রুততর হবে৷ এক্ষেত্রে ইমামদের অনেক বড় দায়িত্ব নিতে হবে৷ তাঁরা যদি খুতবার সময় এই বিষয়টি বারবার উল্লেখ করেন তাহলে সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে তার একটা প্রভাব পড়তে বাধ্য৷
তাই মুসলিম বিশ্বের নীতিনির্ধারকদের প্রথম কাজ হবে ঐ ইসলামি পণ্ডিতদের আহ্বান সব মুসলমানদের জানানোর উদ্যোগ নেয়া৷ এছাড়া ইমামদেরকে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যেন তাঁরা খুতবায় সেগুলো উপস্থাপন করতে পারেন৷
এভাবে ব্যক্তি পর্যায়ে মুসলমানদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারলে ভবিষ্যতে তাঁরাই তাঁদের সরকারের উপর এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে চাপ দিতে পারবে৷
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ইসলামি বিশ্ব কি এই উদ্যোগ নেবে?