ইসরায়েলের স্বাধীনতা ও ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমি হারানোর ৭৬ বছর
১৫ মে বুধবার বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনিরা তাদের জন্মভূমি হারানোর ৭৬তম বার্ষিকী পালন করছে৷ একদিন আগে ১৪ মে স্বাধীনতা দিবস পালন করেছেন ইসরায়েলিরা৷
ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণা
নাৎসি জার্মানিতে হলোকস্টের অভিজ্ঞতার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘ইউনাইটেড নেশন্সস পার্টিশন প্ল্যান ফর প্যালেস্টাইন’ গৃহীত হয়৷ আরব লিগ এটি প্রত্যাখ্যান করলেও ‘জুইশ এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন’ এটি গ্রহণ করে৷ এরপর ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়৷ প্রতিবছর এই দিনে ইসরায়েলে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়৷
যুদ্ধের শুরু
ইসরায়েলি রাষ্ট্রের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় একদিন পর ১৫ মে পাঁচটি আরব রাষ্ট্র যুদ্ধ ঘোষণা করে৷ তবে ১৯৪৯ সালে ইসরায়েলের কাছে তারা পরাজিত হয়৷
নাকবা দিবস
১৯৯৮ সালে ফিলিস্তিনের তৎকালীন নেতা ইয়াসির আরাফাত ১৫ মে নাকবা দিবসের প্রচলন করেন৷ আরবি ‘নাকবা’ শব্দের অর্থ বিপর্যয়৷ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধের পর জন্মভূমি হারানো ফিলিস্তিনিদের বোঝাতে নাকবা শব্দটি ব্যবহার করা হয়৷ ধারনা করা হয়, বর্তমানে যেখানে ইসরায়েল, সেখান থেকে প্রায় সাত লাখ মানুষ পালিয়ে গিয়েছিলেন বা তারা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন৷
নিয়মিত বিক্ষোভ
অনেকদিন ধরেই ফিলিস্তিনিরা নাকবা দিবসে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছে৷ তারা ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে, আগের ঘরের চাবি নিয়ে কিংবা চাবির প্রতীক আঁকা ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করেন৷ এর মাধ্যমে কোনো একদিন ঘরে ফেরার আশার কথা তুলে ধরেন ফিলিস্তিনিরা৷
রাষ্ট্রহীন
যুদ্ধ শেষে বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রহীন শরণার্থী হিসেবে গাজা, দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পাশের আরব দেশগুলোতে চলে গিয়েছিলেন৷ এখন পর্যন্ত পরবর্তী প্রজন্মের ফিলিস্তিনিদের খুব ছোট একটি অংশ অন্য দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন বা পেয়েছেন৷ ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ৬২ লাখ ফিলিস্তিনির একটি বড় অংশ এখনও রাষ্ট্রহীন অবস্থায় আছেন৷
অধিকার
১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজোলিউশন ১৯৪, ১৯৭৪ সালের জাতিসংঘের রেজোলিউশন ৩২৩৬ এবং ১৯৫১ সালের কনভেনশন অন দ্য স্ট্যাটাস অফ রিফিউজিস অনুসারে ফিলিস্তিনি শরণার্থী হিসাবে বিবেচিত ফিলিস্তিনিদের ‘ফেরার অধিকার’ রয়েছে৷ ইসরায়েল অবশ্য ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘ফেরার অধিকার’ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসাবে ইসরায়েলের পরিচয়ের অবসান ঘটাবে৷
অস্বীকার
ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির দায় অস্বীকার করে বলেছে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত প্রায় আট লাখ ইহুদিকে মরক্কো, ইরাক, মিশর, টিউনিশিয়া এবং ইয়েমেনের মতো আরব দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বা পালিয়ে যেতে হয়েছিল৷