ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত কায়রো ছাড়লেন
১০ সেপ্টেম্বর ২০১১রাষ্ট্রদূত ইটঝাক লেভানন তাঁর পরিবারের লোকজন এবং দূতাবাসের কিছু কর্মীকে নিয়ে একটি বেসরকারি বিমানে দেশে ফিরেছেন৷ কিন্তু কায়রোর দূতাবাসের উপর জনতার রোষ এবার যে আকার ধারণ করেছে, তা এর আগে দূতাবাস ভবনটির ছাদে চড়ে ইসরায়েলের পতাকা নামানো ইত্যাদি ঘটনাকেও ছাড়িয়ে গেছে৷ গতমাসে ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে পাঁচজন মিশরীয় সীমান্তরক্ষী নিহত হওয়ার পর থেকেই মিশরে ইসরায়েল বিরোধী মনোভাব মাথা চাড়া দিয়েছে৷ বলতে কি, তথাকথিত আরব বসন্তের এই দিকটি গোড়া থেকেই আশঙ্কা করা হয়েছিল৷ এখন তা বাস্তবে পরিণত হচ্ছে৷
তিনজন নিহত, এক হাজারের বেশি আহত৷ আহতদের মধ্যে ৪৬ জন পুলিশ এবং সৈন্য৷ শুক্রবার প্রতিবাদকারিরা দূতাবাসের বহুতল ভবনটির সামনের নিরাপত্তা প্রাকারটি হাতুড়ি ও কাঠের গুঁড়ি দিয়ে ভেঙে ভিতরে ঢোকে, দূতাবাসে ঢুকে ইসরায়েলের পতাকা সরিয়ে মিশরের পতাকা ওড়ায়, দূতাবাসের বহু - প্রধানত অ-গোপনীয় - নথিপত্র লুটপাট করে৷ বাইরে তাদের পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরাতে দেখা যায়৷ কাছের একটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সও আক্রান্ত হয়৷
এখন শোনা যাচ্ছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাষ্ট্রদূতকে জরুরি আলাপ-আলোচনার জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন৷ অপরদিকে নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনের সঙ্গেও কথা বলেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ওবামা ‘‘বিপুল উদ্বেগ'' প্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু আসল উদ্বেগ হল মিশর সরকারের৷ স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী মনসুর আল-ইসাওয়ি উচ্চ সতর্কতা ঘোষণা করে সব পুলিশকর্মীর ছুটি বাতিল করেছেন৷ অর্থাৎ তিনি আগামীতেও এ'ধরনের ইসরায়েল বিরোধী ঘটনার আশঙ্কা করছেন৷ ওদিকে মিশরীয় প্রধানমন্ত্রী এসাম শরফ মন্ত্রীসভার একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন৷ আরো বড় কথা: সরকারি আল-আহরম দৈনিক তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে যে, সরকার নাকি এই সহিংসতা রোধের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার দরুণ পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন৷
জনতা শুক্রবার সারারাত ধরে চোর-পুলিশ খেলার মতো পুলিশকে ব্যস্ত রেখেছে: এদিকে টায়ার পোড়ানো হয়েছে, ওদিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস চালিয়েছে৷ পর্যবেক্ষকদের মতে জনতা পুলিশের ধৈর্য এবং ক্ষমতা, দুটোই পরীক্ষা করে দেখছে৷ অপরদিকে মিশর-ইসরায়েল সম্পর্কের একটা নতুন মূল্যায়নও এ'ভাবে ধীরে-ধীরে অবধারিত হয়ে উঠছে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম