ইসরায়েলে নির্বাচনের পর এবার সরকার গড়ার পালা
১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯সিপি লিভনি এবং বিনয়ামিন নেতানিয়াহু – দুজনেই নির্বাচনে জয়ের দাবি করছেন৷ মনে রাখতে হবে, ইসরায়েলের ইতিহাসে কখনো কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি৷ এবারেও জোট সরকার ছাড়া কোনো উপায় নেই৷ ২৮টি আসন পেয়ে কাদিমা পার্টি ও ১৩টি আসন পেয়ে তাদের এতদিনকার জোটসঙ্গী লেবার পার্টির সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই৷ ফলে তাদের প্রয়োজন আরও জোটসঙ্গীর৷ তবে আদর্শগতভাবে এই জোটের সঙ্গে অন্যান্য দলগুলির তেমন কোনো মিল নেই৷ কিন্তু ইসরায়েলের রাজনীতির ইতিহাসের দিকে তাকালে এমন সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ যদি সর্বোচ্চ আসনসংখ্যা পেয়েও শেষ পর্যন্ত লিভনিকে বিরোধী আসনে বসতে হয়, তা হবে এক ঐতিহাসিক ঘটনা৷
লিভনির পক্ষে জোট গঠন করা যতটা কঠিন, রক্ষণশীল লিকুদ দলের নেতা বিনয়ামিন নেতানিয়াহুর পক্ষে তা প্রায় ততটাই সহজ৷ কারণ তাঁর দল ২৭টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও সবচেয়ে স্বাভাবিক জোটসঙ্গী হতে পারে কট্টর জাতীয়তাবাদী ‘ইসরায়েল বেইতেনু’ দল, যার নেতা আভিগদর লিবারমান৷ ঐ দল এবারের নির্বাচনে ১৫টি আসন পেয়েছে৷ দক্ষিণপন্থী সব দলই নেতানিয়াহুকে নেতা হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত৷ সেক্ষেত্রে ঐ জোটের হাতে কমপক্ষে ৬৪টি আসন থাকতে পারে৷ লিবারমান অবশ্য লিভনির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন৷ বুধবারই তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করবেন৷ পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামী সরকার গড়ার চাবিকাঠি লিবারমানের হাতে৷
লিভনি ইতিমধ্যে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে এক জাতীয় ঐক্য সরকার গড়ার ডাক দিয়েছেন৷ কিন্তু নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করেছেন৷
এই অবস্থায় ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেসকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তিনি কাকে প্রথমে সরকার গড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন৷ যিনিই দায়িত্ব পান না কেন, তাঁকে ৪২ দিনের মধ্যে সরকার গড়তে হবে৷ আগামী সপ্তাহে পেরেস আগামী সরকার গড়ার বিষয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন৷
নির্বাচনের পর ইসরায়েলের সম্ভাব্য রাজনৈতিক চালচিত্র দেখে ফিলিস্তিনিরা সামগ্রিকভাবে বেশ হতাশ, কারণ রক্ষণশীল ও কট্টরপন্থী শিবিরই সবেচেয়ে বেশী ভোট পেয়েছে৷ শান্তি প্রক্রিয়া ও ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রশ্নে এই শিবির মোটেই তেমন আগ্রহী নয়৷ ফিলিস্তিনি সরকার অবশ্য মনে করছে, যে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের আন্তর্জাতিক কাঠামোর আওতায় শান্তি আলোচনায় বসতেই হবে৷ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, রক্ষণশীল শিবির ক্ষমতায় এলেও তিনি চিন্তিত হবেন না৷ প্রধানমন্ত্রী সালাম ফায়াদও বলেছেন, যে ইসরায়েলকে সব আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে চলতে হবে৷ সরকারী স্তরে এমন প্রত্যাশা থাকলেও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কিছুটা নৈরাশ্য দেখা যাচ্ছে বৈকি৷ তাদের কাছে এই নির্বাচনে ইসরায়েলী ভোটাররা দক্ষিণপন্থীদের সমর্থন জানিয়েছে – অর্থাৎ শান্তির বিরুদ্ধে৷