ইরানে শারমাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, ক্ষুব্ধ জার্মানি
৩০ অক্টোবর ২০২৪২০২০ সালে দুবাইয়ে শারমাদকে আটক করেছিল ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী৷ এরপর তাকে ইরানে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ২০২৩ সালের শুরুতে ইরানের একটি আদালত তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে শিরাজ শহরে এক বোমা হামলার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন৷
এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন শারমাদ৷ জার্মানির পাশাপাশি তার যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব আছে৷ ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি৷
শারমাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর মঙ্গলবার এক্স-এ এক পোস্টে তার মেয়ে গাজেলে শারমাদ জার্মানির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ চার বছর আগে তার বাবাকে দুবাই থেকে অপহরণ করার পর ঐ দুই দেশের সরকার কী করেছে, তাও জানতে চান তিনি৷
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এক্স-এ এক পোস্টে শারমাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তীব্র সমালোচনা করেছেন৷ এটি একটি ‘কেলেংকারি' বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ শারমাদকে আদালতে নিজের পক্ষ উত্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে জানান জার্মান চ্যান্সেলর৷ তার সরকার বারবার তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান তিনি৷
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকও শারমাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷ শারমাদের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কয়েকবার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দল তেহরানে পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি৷ একজন জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে পরিণতি মারাত্মক হবে বলেও তেহরানকে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল বলে জানান জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর এখন কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা জানাননি বেয়ারবক৷
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বিরোধীদের মত প্রকাশের জন্য একটি ওয়েবসাইট চালু করায় ইরান সরকারের তোপের মুখে পড়েছিলেন শারমাদ৷
জার্মানির বিরোধী দল সিডিইউ-এর প্রধান ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে জার্মানির পক্ষ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ এছাড়া ইরানের কূটনৈতিক মর্যাদা কমিয়ে দেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি৷
তবে জার্মান ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিস বা গিগার ইরান বিশেষজ্ঞ দিবা মিরজাই বলেন, ইরান ও জার্মানির মধ্যে এখন আর তেমন ভালো সম্পর্ক নেই৷ এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে জার্মানির খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও নেই৷ তাই ইরানের বিরুদ্ধে জার্মানি কঠোর কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন৷
গিগার আরেক গবেষক হুসেইন আল মাল্লা মনে করেন, সম্পত্তি জব্দ, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে জার্মানি৷ কয়েকটি দেশ একসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা দিলে সেটি কার্যকর হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷