ইমরানের সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন
৪ এপ্রিল ২০২২পাকিস্তানে রোববার নাটকীয় পরিস্থিতিতে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেয়া হয়েছে। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ডেপুটি স্পিকার খারিজ করে দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রস্তাব মেনে নিয়ে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিয়ে ভোটের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এরপরই বিষয়টি গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উমর বান্দিয়াল জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সব নির্দেশ খতিয়ে দেখতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ওই কথা বলেছেন। বর্তমান অবস্থা বলতে, অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেয়া ও তারপর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেয়াই বুঝিয়ছেন মুখপাত্র। মামলার বিচার করছেন তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
সংবাদপত্র ডন জানাচ্ছে, প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণের পর আইনজীবী আসাদ রহিম বলেছেন, আদালতের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেয়ার বিষয়টি ঝুলে রইল।
ইমরান খান
ইমরান খানকেই কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। রোববার গভীর রাতে প্রেসিডেন্ট সচিবালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বলা হয়েছে, সংবিধানের ২২৪এ(৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জিও টিভি জানাচ্ছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেয়ার পর ইমরান খানও আর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট টুইট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ইমরানই কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট একটি নির্দেশ দেয়। সেখানে অবশ্য ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিস দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, সংবিধানের পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা বলে যে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেয়া হয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত কতটা সাংবিধানিক?
পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিককে সংবিধানের প্রতি অনুগত থাকতে হবে, প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা।
নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, কোনো রকম অভিযোগ নথিবদ্ধ করা হয়নি, অন্যদের কথাও শোনা হয়নি। বিচারপতিরা বলেছেন, আমরা এটাও খতিয়ে দেখতে চাই, এভাবে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করা কি সংবিধানের ৬৯ অনুচ্ছেদের মধ্যে পড়ে? ৬৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে পার্লামেন্টের ভিতরের সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালত কিছু করতে বা বলতে পারে না।
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে
প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই খারাপ না হয়। সব রাজনৈতিক দল যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। তিনি জানিয়েছেন, কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা মন্ত্রক যেন অসাংবিধানিক পদক্ষেপ না নেয়। তারা যেন পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা না করে। তিনি জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা সচিব যেন আদালতকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা জানান।
পাকিস্তান পিপলস পার্টি(পিপিপি)-র আবেদন গ্রহণ করে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আদালত ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখবে। তবে ডেপুটি স্পিকারকে সাসপেন্ড করে দেয়ার আবেদন তিনি খারিজ করে দিয়েছেন।
সেনার বক্তব্য
পাকিস্তানের এই রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। সেনার মুখপাত্র শুধু জানিয়েছেন, সেনা রাজনীতির মধ্যে নেই।
জিএইচ/এসজি (এপি, রয়টার্স, দ্য ডন)