ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে এআই-ডাক্তার
এআই দিয়ে বানানো যান্ত্রিক ডাক্তার ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে লাখ লাখ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে৷ এর সত্যতা কতটুকু, জানুন ছবিঘরে...
ফ্যাক্টচেক: নকল, এআই ডাক্তার
সোশাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে এমন ভিডিও যেখানে দেখানো ডাক্তার আসল নয়, এআই দিয়ে তৈরি সেটা! গলায় স্টেথোস্কোপ ঝোলানো এই ডাক্তারদের দেখতে আসল মনে হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তাদের দেওয়া উপদেশ বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক৷ ডয়চে ভেলে এবিষয়টির সত্যতা যাচাই করেছে৷
চিয়া সিড খেলে কমবে ডায়াবেটিস?
ফেসবুকে জনপ্রিয় একটি ভিডিওতে এমন কথাই বলছে এক এআই-সৃষ্ট নকল ডাক্তার৷ বলছে, চিয়া সিড খেলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে, যা পুরোপুরি মিথ্যা৷ গবেষণা বলছে, চিয়া সিডের সুপ্রভাব রয়েছে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে৷ কিন্তু ডায়বেটিস বা রক্তে চিনির মাত্রার ওঠানামা পুরোপুরি সেরে যাবে, এমনটা নয় মোটেই৷
ভারতে জনপ্রিয় নকল ডাক্তারের ভিডিও
এই ধরনের বেশ কয়েকটি ভিডিও তৈরি হয় হিন্দি ভাষায়, ভারতের জনতার উদ্দেশ্যে৷ ২০২১ সালের একটি গবেষণা জানায় যে করোনাকালীন সময় থেকেই ভারত ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মুক্তাঙ্গন হয়ে উঠছে৷ অ্যামেরিকা, ব্রাজিল বা স্পেনের তুলনায় অনেক দ্রুত ভারতে ছড়াচ্ছে এমন ‘ফেক নিউজ’৷
কেন সহজেই বিশ্বাসযোগ্য হন নকল ডাক্তাররা
ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন গিলবার্টের মতে, ইন্টারনেটে ডাক্তার তখনই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে যখন তারা আর পাঁচটা ডাক্তারের মতোই প্রেসক্রিপশন দেন, রোগ নির্ণয় করেন এবং ইন্টারনেটে এসব দেখে মানুষ ভেবে বসেন যে এরা হয়তো আসলেই ডাক্তার৷
মস্তিষ্কের রোগের চিকিৎসাও ইন্টারনেটে?
আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে বলা হয় যে কাঠবাদাম, চিনির মণ্ড, মৌরি গরম দুধে দিয়ে খেলে নাকি ব্রেনের সব রোগ সেরে যায়! ডয়চে ভেলেকে জার্মান ব্রেন ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানী ফ্রাংক এরবগুথ জানান যে এটি পুরোপুরি মিথ্যা৷ এমন কোনো তথ্য কোনো গবেষণাতে পাওয়া যায়নি৷ এই ভিডিওতেও ছিল সাদা কোট গায়ে এক নকল এআই-ডাক্তার৷
কীভাবে চিনবেন নকল ডাক্তার?
গিলবার্টের মতে, গায়ে সাদা কোট থাকলেই কোনো ব্যক্তিকে ডাক্তার বলে ভাববেন না৷ বরং নজর দিন তার মুখের বা হাতের নড়াচড়ার দিকে, জানাচ্ছেন তিনি এআই-ডাক্তারের ছবিতে ঠোঁট ছাড়া মুখের আর কোনো পেশি নড়তে দেখা যায়না৷ ভিডিওতে দেখানো এক্সরে বা সিটিস্ক্যানের ছবিকেও নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া বিশ্বাস করতে মানা করেন তিনি৷
ভরসা করবেন না চ্যাটবটকেও
কিছু চিকিৎসাবিষয়ক ওয়েবসাইটে চ্যাটবট থাকে৷ চ্যাটবট এমন প্রযুক্তি যা কয়েক মিনিটেই আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে৷ কিন্তু চিকিৎসাবিষয়ক প্রশ্নের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে৷ বিশেষ করে চ্যাটবটের বলা সমাধানকে চোখ বুজে বিশ্বাস করার আগে কোনো চিকিৎসকের থেকে তা যাচাই করে নেওয়া উচিত৷ ভবিষ্যতে চিকিৎসকেরা নিজেরাই যদি চ্যাটবট তৈরি করেন, তা হয়তো চিকিৎসাকে আরো মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবে৷