1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপের সবচেয়ে বড় ভিডিও গেমের মেলা গেম্সকম

২৯ আগস্ট ২০০৯

গত সপ্তাহে কোলনে অনুষ্ঠিত হল ইউরোপের সব চেয়ে বড় কম্পিউটার গেমস এবং ভিডিও গেমস-এর মেলা৷ সারা বিশ্বের প্রায় ৩০ টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল এই মেলায়৷ সে সবদেশের প্রায় ৪২০টি সংস্থা উপস্থিত ছিল তাদের পণ্য নিয়ে৷

https://p.dw.com/p/JLEp
মেলায় গেমস খেলছে এক আগ্রহী দর্শকছবি: Koelnmesse

নতুন ধরণের ভিডিও এবং কম্পিউটার গেমস বের করেছে অসংখ্য কোম্পানি - সেসবই ছিল মেলার মূল আকর্ষণ৷

বলা প্রয়োজন মেলাটি দুটি ভাগে ভাগ করা ছিল৷ একটি অংশে ছিলেন ব্যবসায়ীরা৷ আরেকটি অংশের নাম ছিল এন্টারটেইনমেন্ট এরিয়া৷ সেখানেই আসল ভিড়, ছিল খেলার সুযোগ, দেখার মত অনেক কিছু, দেখানোর মত নতুন খেলা৷ মেলায় সব চেয়ে বেশি এসেছিল অল্প বয়স্ক ছেলে মেয়েরা৷ ৮ থেকে ২২ বছরের ছেলে মেয়েদের চোখে পড়েছে সব চেয়ে বেশি৷ আরেকটু সূক্ষ্মভাবে বলা যেতে পারে - মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের সংখ্যা ছিল বেশি৷ ছেলেরাই এসব বেশি খেলে কিনা !

১৪ বছর বয়সি য়োহানেস মেলায় এসেছে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে৷ সে বলল, আমি কম্পিউটার গেমস ভীষণ পছন্দ করি৷ বেশ ভালো খেলি৷ রোলিং এর খেলাগুলো আমার সবচেয়ে প্রিয়৷ এতে আমি ওস্তাদ৷ এখানে কোন খেলা কেনা যাচ্ছে না তবে পরে কেনা যাবে এবং আমি ইতিমধ্যেই কয়েকটি দেখে রেখেছি৷ পিরানহা বাইট্স নতুন খেলা৷ এটা আমাকে কিনতেই হবে৷

ফুটবল এবং সকার ছিল কম্পিউটার গেমসের নতুন সংযোজন৷ দুই দলে ভাগ করে খেলার আয়োজন করা হয়েছিল মেলাতেই৷ প্রতিটি দলে থাকবে মাত্র ৫ জন৷ সত্যিকার মাঠের সঙ্গে এই ফুটবল খেলার পার্থক্য হল এই খেলার মেয়াদ মাত্র দশ মিনিট৷ খেলোয়াড়রা খেলেছে বড় স্ক্রিনে সামনে বসে খেলা উপভোগ করেছে অন্তত ৪০০ দর্শক৷ এবং সেই ভিড়ে শুধু ছেলে নয় মেয়েরাও ছিল৷ চিৎকার চেঁচামেচিতে তারাই এগিয়ে ছিল৷ দেখে মনে হচ্ছিল কম্পিউটারে নয় খেলা হচ্ছে মাঠে ! দু' দলের পরনে আবার রঙিন জার্সিও ছিল৷ সঙ্গে ছিল দলের টীম ম্যানেজার এবং কোচ৷ এরা ছিল বুন্দেসলীগা অর্থাৎ জার্মান ফুটবল লীগের পেশাদার খেলোয়াড়৷

Flash-Galerie Gamescom Köln 2009
নতুন গেমস দেখতে আগ্রহের কোন কমতি ছিল নাছবি: Koelnmesse

১১ বছরের মেয়ে ট্রিয়ানার জানালো, কি এই গেমসকম, কেন সে এখানে৷ সে জানালো, গেমসকমে এসেছে অনেক ধরণের নতুন খেলা যেগুলো এখনো বাজারে আসেনি৷ এখানে এসব খেলা যে-কেউ খেলে দেখতে পারে৷ আমার প্রিয় খেলা ওয়াটার ওয়ারক্র্যাফ্ট৷ এটি ব্লিজার্ডের একটি খেলা৷ পুতুল খেলা এখন পুরোনো হয়ে গেছে৷ সেগুলো আমার জন্য নয়৷ কোন খেলা কিনবো কিনা তা নির্ভর করছে আমার মায়ের ওপর৷ তবে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেই আমি সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়ি আমার গেমসগুলো নিয়ে৷

একটি ধারণা আমাদের মনে বদ্ধমূল, তা হল - এসব কম্পিউটার গেমস ছেলে মেয়েদের হিংস্র করে তোলে৷ তারা আদব-কায়দা ভুলে যায়৷ তারা হয় রুক্ষ স্বভাবের৷ তবে এই মেলায় দেখা গেছে বেশ কিছু খেলা খেলতে হলে সঙ্গীর প্রয়োজন৷ এবং মাঝে মাঝে আয়োজন করা হয় প্রতিযোগিতার৷ তখন পরিচিত হওয়া যায় অনেকের সঙ্গে৷ বলা প্রয়োজন এসব প্রতিযোগিতাগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের৷

২৩ বছর বয়সের নাভিদ এ পর্যন্ত একবার ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভিডিও গেমস খেলায়৷ চার বার হয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়ন৷ শুরুতে বাবা-মা প্রচন্ড বিরক্ত হতেন, কিন্তু এখন তারা সত্যিই গর্বিত৷ নাভিদ বলল, আমি অনেক ছোট বেলা থেকেই কম্পিউটার গেমসের ভক্ত৷ সুপার নিনটেন্ডো দিয়েই আমার এ খেলা শুরু৷ এরপর এগিয়ে যাই কাউন্টার স্ট্রাইকের মত খেলাগুলোর দিকে৷ তবে ২০০০ সাল থেকে আমি মনোযোগ দিয়ে খেলতে থাকি৷ তখনই জার্মানির হয়ে খেলার সুযোগ পাই৷ আমি সপ্তাহে অন্তত ২০ ঘন্টা খেলি৷ আমার কোচ এবং ম্যানেজারও রয়েছেন৷ ২০০৬ সালে দুবাইতে আমরা দারুণভাবে জিতেছিলাম৷ পুরস্কার হিসেবে আমরা পেয়েছিলাম ৫০ হাজার ইউরো, সবাই একটি করে কম্পিউটার এবং একটি রোলেক্স ঘড়ি৷ এ পর্যন্ত এসব খেলায় আমি অন্তত কয়েক লক্ষবার মারা গিয়েছি কিন্তু আবার বেঁচে ফিরে এসেছি !

একটি কথা ঠিক এসব খেলার দাম কিন্তু অনেক৷ কয়েকশ ইউরো পর্যন্ত একেকটি গেমের দাম গড়াতে পারে৷ বড় দিন অর্থাৎ ক্রিসমাস এগিয়ে আসছে৷ সবাই এখনই বেছে নিচ্ছে, দেখে নিচ্ছে বড় দিনের উপহার হিসেবে বাবা-মায়ের কাছ থেকে কি আদায় করা যেতে পারে৷

প্রতিবেদক: মারিনা জোয়ারদার, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল ফারুক