ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য জার্মানিতে আরো উদ্যোগ
৮ মার্চ ২০২২ইউরোপের অন্য কিছু দেশের মতো জার্মানিতেও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে আগত শরণার্থীর ঢল নামছে৷ জাতিসংঘের শরণার্থী সহায়তা দফতর ইউএনএইচিআর-এর সূত্র অনুযায়ী গত প্রায় দুই সপ্তাহে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ দেশত্যাগ করেছেন৷ জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু সোমবারই কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষের আগমন নথিভুক্ত করেছে৷ তবে শেঙেন এলাকার অংশ হিসেবে জার্মানি-পোল্যান্ড সীমান্ত উন্মুক্ত হওয়ায় সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না৷ ইউক্রেন থেকে আসা সব শরণার্থীদের জার্মানিতে বাধ্যতামূলকভাবে নথিভুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন কিছু রাজনীতিক৷
পূবে পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে জার্মানিতে প্রবেশ করার পর শরণার্থীদের এক বড় অংশ রাজধানী বার্লিনে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ বার্লিনের শাসক মেয়র ফ্রানৎসিস্কা গিফাই ইতোমধ্যেই সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন৷ ইউক্রেনের সরকার সবল পুরুষদের দেশত্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণার পর সে দেশ থেকে মূলত নারী ও শিশুরাই বেরিয়ে যাচ্ছেন৷ তাদের সাহায্য করার বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বার্লিনের রাজ্য প্রশাসন৷
অনেক শরণার্থী সরাসরি আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের কাছে চলে যাচ্ছেন৷ কিন্তু যারা সরকারি সহায়তার উপর নির্ভর করছেন, প্রকৃত সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের ভার জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে বণ্টন করার জন্য চাপ বাড়ছে৷ সরকারের শরিক এফডিপি দলের নেতা ভল্ফগাং কুবিকি সেই লক্ষ্যে অবিলম্বে ফেডারেল ও রাজ্য সরকারের শীর্ষ বৈঠকের ডাক দিয়েছেন৷ জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগের প্রেসিডেন্ট বেয়ার্বেল বাস শরণার্থীর ঢল সামলাতে পৌর ও জেলা কর্তৃপক্ষের জন্য বাড়তি সরকারি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন৷ বিশেষ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আসা আতঙ্কগ্রস্ত শিশুদের সহায়তা করতে বাড়তি উদ্যোগের ডাক দিয়েছেন তিনি৷
ইউক্রেনীয় শিশু-কিশোরদের যত দ্রুত সম্ভব কিন্ডারগার্টেন ও স্কুলে ভর্তির ডাকও বাড়ছে৷ এমন চ্যালেঞ্জ সামলানো কঠিন হলেও তাদের জন্য করোনাসহ অন্যান্য টিকার ব্যবস্থার মতো সাংগঠনিক কাজ সেরে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেক নেতা৷ তাদের মতে, শিশু-কিশোররা স্কুলে ভর্তি হলে তাদের মায়েরা কাজের সুযোগ পাবেন এবং সরকারি সাহায্যের উপর নির্ভর না করে উপার্জন করতে পারবেন৷ ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সে দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের কমপক্ষে তিন বছরের জন্য জার্মানিতে থাকার অনুমতির ডাক দিচ্ছে কিছু মহল৷ সে ক্ষেত্রে জার্মানি ভাষা শিক্ষা ও চাকুরির ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে৷ স্কুলের বদলে শরণার্থী শিবিরে ইউক্রেনীয় ভাষায় স্কুলশিক্ষার প্রস্তাবও শোনা যাচ্ছে৷
শরণার্থীদের ভিড়ে বিপজ্জনক অপরাধী ও সন্ত্রাসবাদীদের আগমনের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন জার্মানির কিছু নেতা৷ বিশেষ করে নাগরিকত্ব বিবেচনা না করে জার্মানি ইউক্রেন থেকে আসা সব শরণার্থীর জন্য দ্বার খুলে দেওয়ায় এমন আশঙ্কা বিরাজ করছে৷ জার্মানির ফেডারেল পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, যে এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো অস্বাভাবিক কার্যকলাপ দেখা যায় নি৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)